মাহবুব-উল আলম চৌধুরী( ভাষাসৈনিক)

প্রথম পাতা » জীবনী » মাহবুব-উল আলম চৌধুরী( ভাষাসৈনিক)


মাহবুব-উল আলম চৌধুরী( ভাষাসৈনিক)

একুশের কালজয়ী কবি  কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি। একুশের প্রথম কবিতা এটি এবং নির্দ্বিধায়। এটি একটি কালজয়ী কবিতা। পাকিস্তান সরকার কবিতাটি বাজেয়াপ্ত করেছিল এবং কবির নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল। কবিতাটি কবিতা তো নয়, যেন বিদ্রোহের জ্বলন্ত স্ফুলিঙ্গ। এই স্ফুলিঙ্গের স্রষ্টা মাহবুব-উল আলম চৌধুরী। তার পরিচয় কেবল এই কালজয়ী কবিতারস্রষ্টার মধ্যে নিহিত নয়। প্রগতির আন্দোলনে নিবেদিত একজন মানুষ তিনি। তার জীবনটা ছিল নানামুখী কর্মকাণ্ডে ব্যাপ্ত। তার জীবন পরিক্রমায় দেশ, রাজনীতি, সমাজ, সংস্কৃতি, স্বাধিকার ও মুক্তিযুদ্ধসহ সর্বক্ষেত্রেওতপ্রোতভাবে ভূমিকা রেখেছেন তিনি। শুরুটা সেই ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক সময় থেকে। তৎকালীন স্বাধীনতাকামী রাজনৈতিক সংগ্রামী কিশোর মাহবুব-উল আলম চৌধুরী নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে অসাম্প্রদায়িক আন্দোলন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে যুক্ত হয়েছিলেন। শুধু তাই-ই নয়, বাংলাদেশের শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত থেকে কখনো নাট্যকার, কখনো কবি, কখনো সাংবাদিক হিসেবে রেখেছেন অসামান্য ভূমিকা।

মাহবুব-উল আলম চৌধুরীর জন্ম ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দের ৭ নভেম্বর। চার বছর বয়সে মাতৃহারা এবং ১২ বছর বয়সে পিতৃহারা হয়েছেন তিনি। বাল্যকাল থেকে বেড়েওঠেছেন বিষণ্ন বিপন্ন মানসিকতায়। ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে ১৫ বছর বয়সে চট্টগ্রাম জেলা হতে কংগ্রেসে যোগ দেন এবং তদসঙ্গে যুক্ত হন ব্রিটিশ বিরোধী ‘ভারত ছাড়’ আন্দোলনে। ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে ১৮ বছর বয়সে কংগ্রেসের রাজনীতি ছেড়ে যুক্ত হনকমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে। তিনি ছাত্র ফেডারেশনের কর্মী ছিলেন তখন। সে সময়  ট্টগ্রাম প্রগতি লেখক শিল্পী সংঘের সহকারী সম্পাদক নিযুক্ত হয়েছিলেন। ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনের বীর বিপ্লবীরা কারামুক্ত হলে তাদের নিয়ে গঠিত দাঙ্গা বিরোধী শান্তি কমিটির কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ‘সীমান্ত’ পত্রিকা তার সম্পাদনায় প্রকাশ হতে থাকে। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে কৃষক আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন। এ সময় নাটক করেছেন, নাটক লিখেছেন এবং নাট্য সংগঠনও গড়ে তুলেছিলেন তিনি। ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় অনুষ্ঠিত বিশ্বশান্তি সভায় যোগ দেন।




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ