খান আসিফুর রহমান আগুন

প্রথম পাতা » জীবনী » খান আসিফুর রহমান আগুন


খান আসিফুর রহমান আগুন

খান আসিফুর রহমান আগুন

যিনি আগুন হিসেবে পরিচিত, তিনি একজন বাংলাদেশী কণ্ঠশিল্পী ও অভিনেতা।তিনি প্রখ্যাত বাংলাদেশী সঙ্গীতজ্ঞ ও চলচ্চিত্রকার খান আতাউর রহমান ও সঙ্গীতশিল্পী নীলুফার ইয়াসমীন দম্পতির একমাত্র ছেলে। কেয়ামত থেকে কেয়ামত চলচ্চিত্রে গান গাওয়ার মাধ্যমে তার সঙ্গীতজীবন শুরু হয়। পরবর্তীতে তিনি চলচ্চিত্র ও নাটকে অভিনয় করেন।এখনো অনেক রাত চলচ্চিত্রে গানে কণ্ঠ দেওয়ার জন্য তিনি বাচসাস পুরস্কার লাভ করেন। এ চলচ্চিত্রে তিনি অভিনয়ও করেন।

প্রাথমিক জীবন
আগুন বাংলাদেশের ঢাকায় একটি প্রসিদ্ধ সঙ্গীত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা খান আতাউর রহমান ছিলেন দেশের একজন খ্যাতনামা সঙ্গীত পরিচালক, সুরকার, গীতিকার, কণ্ঠশিল্পী, অভিনেতা, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক।তার মা নীলুফার ইয়াসমীনও একজন সঙ্গীতশিল্পী ছিলেন। দেশের খ্যাতনামা দুই কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন ও ফরিদা ইয়াসমিন তার খালা। এছাড়া কণ্ঠশিল্পী রুমানা ইসলাম তার সৎ বোন।

সঙ্গীতজীবন
আগুনের সঙ্গীত জীবন শুরু হয় ১৯৮৮ সালে ‘সাডেন’ ব্যান্ডের ভোকাল হিসেবে। সাডেন ব্যান্ড ও আগুনের একক অ্যালবাম ওগো প্রেয়সীর গানগুলোর মধ্যে “বৈশাখী মেলা”, “উত্তাল সমুদ্র” ও “ভালোবাসি” শ্রোতাপ্রিয়তা লাভ করে। তিনি ১৯৯২ সালে সাডেন ব্যান্ড ত্যাগ করেন।১৯৯২ সালে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত কেয়ামত থেকে কেয়ামত চলচ্চিত্রের গান গাওয়ার মাধ্যমে তার চলচ্চিত্রের গানে অভিষেক হয়। ১৯৯৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রটিতে তার গাওয়া গানগুলো জনপ্রিয়তা লাভ করে। এই চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালনা করেছিলেন আলম খান। পরে তিনি সত্য সাহা, আনোয়ার পারভেজ, আলাউদ্দিন আলী, আলী হোসেন, আবু তাহের, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলদের মতো প্রথিতযশা সুরকার ও সঙ্গীত পরিচালকদের সুরকৃত গানে কণ্ঠ দেন। ১৯৯৭ সালে তিনি এখনো অনেক রাত চলচ্চিত্রে “ও আমার জন্মভূমি” গানের জন্য বাচসাস পুরস্কার লাভ করেন।সর্বশেষ ২০১৬ সালে তিনি জীবনের অদ্ভুত প্রেম চলচ্চিত্রের জন্য কণ্ঠ দিয়েছেন।

চলচ্চিত্রে গান গাওয়ার পাশাপাশি তিনি ১৫টি অ্যালবামেও কণ্ঠ দিয়েছেন। ২০০০ সাল পর্যন্ত তিনি নিয়মিত অ্যালবামের গানে কণ্ঠ দিলেও পরে তিনি তা কমিয়ে দেন। ২০১১ সালে প্রকাশিত হয় তার ১৩তম গানের অ্যালবাম কি যে কান্না পেয়েছিল। দুই বছর বিরতির পর ২০১৩ সালে তিনি প্রথম রবীন্দ্র সঙ্গীত-এর অ্যালবাম এই কথাটি মনে রেখ প্রকাশ করেন। এই অ্যালবামের সঙ্গীত আয়োজন করেন পার্থ মজুমদার।পরে দীর্ঘ তিনি বছর বিরতির পর ২০১৬ সালে প্রকাশ করেন তার ১৫তম অ্যালবাম কাঁচের দেয়াল। সঙ্গীতা থেকে প্রকাশিত গানগুলোর সঙ্গীতায়োজন করেছেন রেজওয়ান শেখ।

অভিনয়জীবন
আগুনের অভিনয়ের সূত্রপাত হয় ১৯৯৭ সালে তার বাবা খান আতা পরিচালিত এখনো অনেক রাত চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। ২০১২ সালে হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত শেষ চলচ্চিত্র ঘেটুপুত্র কমলা চলচ্চিত্রে একজন চিত্রশিল্পী চরিত্রে অভিনয় করেন। ২০১৪ সালে অভিনয় করেন আনিসুল হক রচিত জননী সাহসিনী উপন্যাস অবলম্বনে শাহ আলম কিরণ পরিচালিত মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক ৭১ এর মা জননী চলচ্চিত্রে। সর্বশেষ ২০১৫ সালে তিনি সুমন ধর পরিচালিত অমি ও আইস্ক্রিমঅলা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এতে তার ছেলে মিছিলও অভিনয় করেন।

চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি নাটকেও অভিনয় করেছেন। ২০০৫ সালে তিনি অজানা সৈকতে নাটক এবং রঙের মানুষ ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করেন। ২০১৩ সালে তিনি ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট, প্রবাসে পরবাসে ও কুয়াশার ভোর ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করেন। অর্ক মোস্তফা পরিচালিত ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট একুশে টেলিভিশনে প্রচারিত হয়। সকাল আহমেদ পরিচালিত প্রবাসে পরবাসে চ্যানেল আইয়ে প্রচারিত হয়। রাবেয়া খাতুন রচিত উপন্যাস অবলম্বনে অরুণ চৌধুরী নির্মিত কুয়াশার ভোর চ্যানেল আইয়ে প্রচারিত হয়।একই বছর সুজন বড়ুয়া পরিচালিত বাজী নাটকে হোটেল বয় চরিত্রে অভিনয় করেন। নাটকটি ঈদে মাছরাঙ্গা টেলিভিশনে প্রচারিত হয়। ২০১৫ সালে ঈদ উপলক্ষে নির্মিত বালির গল্প নাটকে অভিনয় করেন। এতে তার বিপরীতে অভিনয় করেন মডেল-অভিনেত্রী সাদিয়া ইসলাম মৌ।২০১৬ সালে আরিফ খান পরিচালিত শ্রাবণ এসেছিল গান হয়ে টেলিফিল্মে অভিনয় করেন। এতে একসাথে আগুনসহ পাঁচজন সঙ্গীতশিল্পী অভিনয় করেন।

চলচ্চিত্রের তালিকা

প্লেব্যাক করা চলচ্চিত্র
কেয়ামত থেকে কেয়ামত (১৯৯৩)
অন্ধ প্রেম (১৯৯৩)
দোলা (১৯৯৩)
তুমি আমার (১৯৯৪)
প্রেমযুদ্ধ (১৯৯৪)
সুজন সখি (১৯৯৪)
অন্তরে অন্তরে (১৯৯৪)
বিক্ষোভ (১৯৯৪)
মহামিলন (১৯৯৫)
দেনমোহর (১৯৯৫)
আশা ভালোবাসা (১৯৯৫)
লাভ স্টোরি: প্রেমের গল্প (১৯৯৫)
বিশ্বপ্রেমিক (১৯৯৫)
নির্মম (১৯৯৬)
মায়ের অধিকার (১৯৯৬)
জীবন সংসার (১৯৯৬)
স্বপ্নের পৃথিবী (১৯৯৬)
সত্যের মৃত্যু নেই (১৯৯৬)
এই ঘর এই সংসার (১৯৯৬)
চাওয়া থেকে পাওয়া (১৯৯৬)
বিচার হবে (১৯৯৬)
প্রিয়জন (১৯৯৬)
বশিরা (১৯৯৬)
প্রেম পিয়াসী (১৯৯৭)
শুধু তুমি (১৯৯৭)
আনন্দ অশ্রু (১৯৯৭)
স্বপ্নের নায়ক (১৯৯৭)
বুকের ভেতর আগুন (১৯৯৭)
ভন্ড (১৯৯৮)
বিয়ের ফুল (১৯৯৯)
আম্মাজান (১৯৯৯)
ম্যাডাম ফুলি (১৯৯৯)
লাঠি (১৯৯৯)
উত্তরের খেপ (২০০০)
কষ্ট (২০০০)
গুন্ডা নাম্বার ওয়ান (২০০০)
ঝড় (২০০০)
শিকারী (২০০১)
দুই দুয়ারী (২০০১)
মাস্তানের উপর মাস্তান (২০০২)
হাছন রাজা (২০০২)
জুয়াড়ি (২০০২)
টপ সম্রাট (২০০৩)
মমতাজ (২০০৫)
হৃদয়ের কথা (২০০৬)
জবাব দে (২০০৬)
ভন্ড ওঝা (২০০৬)
১ টাকার বউ (২০০৮)
বাবা আমার বাবা (২০০৮)
আমার আছে জল (২০০৮)
ভালোবাসা দিবি কিনা বল? (২০০৯)
জন্ম তোমার জন্য (২০০৯)
এভাবেই ভালোবাসা হয় (২০১০)
দুই পুরুষ (২০১১)
চেহারা: ভন্ড ২ (২০১২)
ভালোবাসার রঙ (২০১২)
প্রেমিক নাম্বার ওয়ান (২০১৩)
জোনাকির আলো (২০১৪)
৭১ এর মা জননী (২০১৪)
ভালোবাসলে দোষ কি তাতে (২০১৪)
সীমারেখা (২০১৪)
মা বাবা সন্তান (২০১৫)

অভিনীত চলচ্চিত্র

বছর চলচ্চিত্র চরিত্র পরিচালক সহশিল্পী টীকা

১৯৯৭ এখনো অনেক রাত সাব্বির খান আতাউর রহমান ফারুক, সুচরিতা, ববিতা প্রথম অভিনীত চলচ্চিত্র
২০১২ ঘেটুপুত্র কমলা শাহ আলম হুমায়ূন আহমেদ তারিক আনাম খান, মুনমুন আহমেদ, মামুন
২০১৪ ৭১ এর মা জননী হাশেম শাহ আলম কিরণ নিপুণ আক্তার
২০১৫ অমি ও আইস্ক্রিমঅলা আব্দুল সুমন ধর তারিক আনাম খান, মিছিল
অভিনীত নাটক
অজানা সৈকতে
রঙের মানুষ
ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট (২০১৩)
বাজী (২০১৩)
বালির গল্প (২০১৫)
শ্রাবণ এসেছিল গান হয়ে (২০১৬)
অ্যালবাম
ওগো প্রেয়সী
কি যে কান্না পেয়েছিল (২০১১)
এই কথাটি মনে রেখ (২০১৩)
কাঁচের দেয়াল (২০১৬)
পুরস্কার
বাচসাস পুরস্কার

বছর বিভাগ চলচ্চিত্র ফলাফল

১৯৯৭ শ্রেষ্ঠ পুরুষ কণ্ঠশিল্পী এখনো অনেক রাত বিজয়ী

তথ্যসূত্রঃ উকিপিডিয়া




আর্কাইভ