জসিম (Jashim)

প্রথম পাতা » জীবনী » জসিম (Jashim)


জসিম

 

জসিম

আবুল খায়ের জসিম উদ্দিন (পেশাদার নাম জসিম নামেই অধিক পরিচিত; ১৯৫০ – ১৯৯৮) ছিলেন একজন বাংলাদেশী চলচ্চিত্র অভিনেতা, প্রযোজক, ফাইট পরিচালক ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। অনেকেই তাকে বাংলা চলচ্চিত্রের অ্যাকশনের পথপ্রদর্শক হিসেবে মনে করেন। তিনি প্রখ্যাত অভিনেতা আজিমের হাত ধরে চলচ্চিত্রে আসেন। ১৯৭২ সালে ‘দেবর’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বাংলা চলচ্চিত্রে অভিষেক হয়।

প্রাথমিক জীবন
জসিম ১৯৫০ সালের ১৪ আগস্ট তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশ) ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার বক্সনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রকৃত নাম আবদুল খায়ের জসিম উদ্দিন। জসিম ১৯৭১ সালে স্বাধীনতাযুদ্ধে একজন সৈনিক হিসেবে দুই নম্বর সেক্টরে মেজর হায়দারের নেতৃত্বে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন।

চলচ্চিত্র জীবন

৯০ এর দশকে একটি ছবির শুটিং এর সময়ে জসিম
জসিম আশির দশকে বাংলা চলচ্চিত্রে দর্শকপ্রিয়তা অর্জন করেন। জসিম চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন দেবর চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ১৯৭২ সালে। এই ছবিতে জসিম চলচ্চিত্র পরিচালকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হন। ১৯৭৩ সালে তিনি রংবাজ ছবিতে অ্যাকশন ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেন তিনি। তিনি পরিচিতি পান দেওয়ান নজরুল পরিচালিত দোস্ত দুশমন চলচ্চিত্রে খলনায়কের অভিনয় করে। খলনায়ক চরিত্রের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করলেও পরবর্তীকালে নায়ক হিসেবেও তিনি সফলতা পেয়েছিলেন। দোস্ত দুশমন ছবিটি সাড়াজাগানো হিন্দি চলচ্চিত্র শোলের পুনর্নিমাণ। ছবিটিতে তিনি গাফফার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।খোদ শোলে ছবির নামকরা চরিত্র গব্বার সিং এর আদলে থাকা ভারতীয় খলনায়ক আমজাদ খান পর্যন্ত ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন জসিমের। তার খলনায়ক অভিনয়ের সমাপ্তি ঘটে ‘সবুজ সাথী’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে। সবুজ সাথী চলচ্চিত্রে তিনি প্রথম প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন। এই চলচ্চিত্রে তিনি নায়ক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন এবং মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত নায়ক হিসেবেই অভিনয় চালিয়ে যান।

আশির দশকের সকল জনপ্রিয় নায়িকার বিপরীতে অভিনয় করেছেন এই অ্যাকশন অভিনেতা। তবে শাবানা ও রোজিনার সাথে তার জুটিই সবচেয়ে দর্শকপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। বিভিন্ন চলচ্চিত্রে তাকে শোষণ-বঞ্চিত মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে দেখা যায়।

ব্যক্তিগত জীবন
জসিমের প্রথম স্ত্রী ছিলেন ড্রিমগার্লখ্যাত নায়িকা সুচরিতা। পরে তিনি ঢাকার প্রথম সবাক ছবির নায়িকা পূর্ণিমা সেনগুপ্তার মেয়ে নাসরিনকে বিয়ে করেন । জসিমের তিন ছেলে রাতুল, রাহুল, সামি । যার মধ্যে রাতুল ও সামি ‘ওউনড’ ব্যান্ডের বেজিস্ট ও ড্রামার আর রাহুল ‘ট্রেইনরেক’ ব্যান্ডের গিটারিস্ট।

চলচ্চিত্রের তালিকা
দেবর (১৯৭২)
রংবাজ (১৯৭৩) - জসিম
জিঘাংসা (১৯৭৪) - জঙ্গা ডাকু
ডাকু মনসুর (১৯৭৪)
বিচার (১৯৭৪)
জেহাদ (১৯৭৪)
ভাইবোন (১৯৭৪)
দুই রাজকুমার (১৯৭৫)
সোনার খেলনা (১৯৭৫)
অপরাধ (১৯৭৫)
এপার ওপার (১৯৭৫) - আসলাম
টারজান অব বেঙ্গল (১৯৭৬)
এক মুঠো ভাত (১৯৭৬)
কাজল রেখা (১৯৭৬)
খান বাহাদুর (১৯৭৬)
প্রতিনিধি (১৯৭৬)
নিশান (১৯৭৭)
দোস্ত দুশমন (১৯৭৭) - গাফফার খান
দাতা হাতেম তাই (১৯৭৭)
লুকোচুরি (১৯৭৭)
নিশান (১৯৭৭)
রাজদুলারী (১৯৭৮)
আসামী হাজির (১৯৭৮) - ডাকু ধর্মা
তুফান (১৯৭৮)
মহেশখালীর বাঁকে (১৯৭৮)
নাগ নাগিনী (১৯৭৯)
বিজয়িনী সোনাভান (১৯৭৯)
সুন্দরী (১৯৭৯) - ঈমান আলী
প্রতিজ্ঞা (১৯৮০)
কসাই (১৯৮০)
নবাবজাদী (১৯৮১)
বাঁধনহারা (১৯৮১)
ওস্তাদ সাগরেদ (১৯৮১)
সবুজ সাথী (১৯৮২)
লাইলী মজনু (১৯৮৩) - ডাকু সর্দার
ঘরের বউ (১৯৮৩)
জনি (১৯৮৩)
নাজমা (১৯৮৩) - জাফর মির্জা
অভিযান (১৯৮৪) - রউফ
জিদ্দি (১৯৮৫)
আক্রোশ (১৯৮৬)
অশান্তি (১৯৮৬)
নিষ্পাপ (১৯৮৬)
রকি (১৯৮৬)
লালৃু মাস্তান (১৯৮৭) - রাজু / লালু
সারেন্ডার (১৯৮৭) - জসিম
মাস্তান (১৯৮৭)
সুখ শান্তি (১৯৮৭)
আদিল (১৯৮৮)
ভাইজান (১৯৮৯) - লাট
ছোট বউ (১৯৯০)
ধনরত্ন (১৯৯০)
কাজের বেটি রহিমা (১৯৯১)
ন্যায় অন্যায় (১৯৯১)
লক্ষ্মীর সংসার (১৯৯২)
শান্তি অশান্তি (১৯৯২)
হিংসা (১৯৯৩)
নাগ নাগিনীর প্রেম (১৯৯৩)
আশিক প্রিয়া (১৯৯৩)
কালিয়া (১৯৯৪) - কালিয়া
বাংলার নায়ক (১৯৯৫) - ডন
ঘাত প্রতিঘাত (১৯৯৬)
গরীবের সংসার (১৯৯৬)
গরীবের ওস্তাদ (১৯৯৬)
নিষ্ঠুর (১৯৯৬)
স্বামী কেন আসামী (১৯৯৭)
ফাইভ রাইফেলস (১৯৯৭)
টাইগার (১৯৯৭)
মেয়েরাও মানুষ (১৯৯৮)
ভালবাসার ঘর (১৯৯৭)
জিদ্দী (১৯৯৯)
উৎসর্গ (১৯৭৪)
বিচার (১৯৭৪)
ডাকু মনসুর (১৯৭৪)
সোনার খেলনা (১৯৭৫)
দুই রাজকুমার (১৯৭৫)
লুকোচুরি (১৯৭৭)
দোস্ত দুশমন (১৯৭৭)
দাতা হাতেম তাই (১৯৭৭)
রাজদুলারী (১৯৭৮)
শাহজাদা (১৯৭৮)
তুফান (১৯৭৮)
জবাব (১৯৭৯)
বারুদ (১৯৭৯)
বদলা (১৯৭৯)
বিজয়িনী সোনাভান (১৯৭৯)
লুটেরা (১৯৮০)
রাজনন্দিনী (১৯৮০)
ওমর শরীফ (১৯৮০)
বাদল (১৯৮১)
বাঁধনহারা (১৯৮১)
ওস্তাদ সাগরেদ (১৯৮১)
সবুজ সাথী (১৯৮২)
মান সম্মান (১৯৮৩)
ঘরের বউ (১৯৮৩)
নাগরানী (১৯৮৩)
নাজমা (১৯৮৩)
হাসান তারেক (১৯৮৪)
জালিম (১৯৮৪)
সালতানাৎ (১৯৮৪)
মহল (১৯৮৪)
সকাল সন্ধ্যা (১৯৮৪)
অন্যায় (১৯৮৫)
দরদী শত্রু (১৯৮৫)
আক্রোশ (১৯৮৬)
অশান্তি (১৯৮৬)
দেশ বিদেশ (১৯৮৭)
সারেন্ডার (১৯৮৭)
লালু মাস্তান (১৯৮৭)
মহান (১৯৮৭)
বিশ্বাসঘাতক (১৯৮৮)
অবদান (১৯৮৮)
কোহিনূর (১৯৮৮)
বিজয় (১৯৮৯)
ভাইজান (১৯৮৯)
স্বামীর আদেশ (১৯৯১)
কাজের বেটি রহিমা (১৯৯১)
ভাবীর সংসার (১৯৯১)
লক্ষীর সংসার (১৯৯২)
মাস্তান রাজা (১৯৯৩)
হিংসা (১৯৯৩)
কালিয়া (১৯৯৪)
বাংলার নায়ক (১৯৯৫)
ঘাত প্রতিঘাত (১৯৯৬)
বিশ্বনেত্রী (১৯৯৬)
স্ত্রী হত্যা (১৯৯৬)
গরিবের সংসার (১৯৯৬)
আখেরি মোকাবেলা (১৯৯৬)
গরিবের ওস্তাদ (১৯৯৬)
মর্যাদার লড়াই (১৯৯৬)
নিষ্ঠুর (১৯৯৬)
স্বামী কেন আসামী (১৯৯৭)
চিরশত্রু (১৯৯৭)
মেয়েরাও মানুষ (১৯৯৮)
ভালবাসার ঘর (১৯৯৮)
দুই রংবাজ (১৯৯৮)
পরাধীন (১৯৯৮)
জিদ্দি (১৯৯৯)
লাট সাহেব (১৯৯৯)
১। তীর ভাঙ্গা ঢেউ (১৯৭৫) ২। মোকাবেলা (১৯৮০) ৩। রাজনন্দিনী (১৯৮০) ৪। হুর-এ-আরব (১৯৮০) ৫। শাহী দরবার (১৯৮০) ৬। কসাই (১৯৮০) ৭। আলাদীন আলীবাবা সিন্দাবাদ (১৯৮১) ৮। সোহাগ মিলন (১৯৮২) ৯। আলী আসমা (১৯৮২) ১০। যুবরাজ (১৯৮২) ১১। আল হেলাল (১৯৮২) ১২। শাহী চোর (১৯৮৩) ১৩। অভিযান (১৯৮৪) ১৪। হাসান তারেক (১৯৮৪) ১৫। দ্বীপকন্যা (১৯৮৪) ১৬। মুজাহিদ (১৯৮৫) ১৭। শমসের (১৯৮৫) ১৮। হালচাল (১৯৮৬) ১৯। গৃহ বিবাদ (১৯৮৬) ২০। শত্রু (১৯৮৬) ২১। রাজমাতা (১৯৮৬) ২২। হাতি আমার সাথী (১৯৮৭) ২৩। ভাগ্যবতী (১৯৮৭) ২৪। সুখ শান্তি (১৯৮৭) ২৫। ভরসা (১৯৮৭) ২৬। টাকা পয়সা (১৯৮৮) ২৭। বৌমা (১৯৮৯) ২৮। এক্সিডেন্ট (১৯৮৯) ২৯। বিস্ফোরণ (১৯৮৯) ৩০। জাদরেল বউ (১৯৯০) ৩১। ধনরত্ন (১৯৯০) ৩২। অশান্ত সংসার (১৯৯০) ৩৩। ওমর আকবর (১৯৯০) ৩৪। নির্দয় (১৯৯১) ৩৫। নিঃস্বার্থ (১৯৯১) ৩৬। বিধান (১৯৯১) ৩৭। ডিসকো বাইদানী (১৯৯৪)

যাদুনগর
গর্জন
মোহামম্দ আলি
আখেরী মোকাবেলা
হিরো
বাইদা
রাজা বাবু
গরিবের মাস্তান
স্বামীর আদেশ
বিজয়
ওমর আকবর
পরিবার
রক্তের বদলা
সাহস
গর্জন
হাবিলদার
শত্রুতা
মান সম্মান
প্রতিহিংসা
জিজ্ঞাসা
রূপসী নাগিন
মৃত্যু
জসিম ১৯৯৮ সালের ৮ই অক্টোবর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে পরলোকগমন করেন । জসিমের মৃত্যুর পর এফডিসিতে তার নামে একটি ফ্লোরের নামকরণ করা হয়।

তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া




আর্কাইভ