আবু জাফর শামসুদ্দীন(জীবনী)

প্রথম পাতা » জীবনী » আবু জাফর শামসুদ্দীন(জীবনী)


আবু জাফর শামসুদ্দীন

আবু জাফর শামসুদ্দীন। ধর্মনিরপেক্ষতা, বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল লেখক তিনি। সাংবাদিকতাতেও যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছিলেন। তার জন্ম খ্রিস্টাব্দে।১৯২৪-এ স্থানীয় একডালা জুনিয়র মাদ্রাসা থেকে জুনিয়র মাদ্রাসা পরীক্ষায় ও ১৯২৯-এ ঢাকা সরকারি মাদ্রাসা থেকে হাই মাদ্রাসা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। কিছুদিন ঢাকা ইন্টারমিডিয়েট কলেজে অধ্যয়ন করেন। অতঃপর কলকাতায় গমন সৈখানে সাংবাদিকতার চাকরিতে যোগদান করেন। দৈনিক সুলতানের সহ সম্পাদক নিযুক্ত। ১৯৩১-এ সরকারের সেচ বিভাগে কেরানির চাকরি গ্রহণ করেন। ১৯৪২-এ এই চাকরি পরিত্যাগ করে কটকে নির্মীয়মান বিমানঘাঁটি তদারকি অফিসের হেডক্লার্ক পদে যোগ দেন। কয়েক মাস পর এ চাকরি ছেড়ে দিয়ে পুনরায় সাংবাদিকতার চাকরিতে প্রত্যাবর্তন করেন। দৈনিক আজাদের সাব এডিটর পদে নিযুক্তি লাভ করেন। ১৯৪৮-এর অক্টোবরে পত্রিকাটি কলকাতা থেকে ঢাকায় স্থানান্তর হওয়ার পর এর সহকারী সম্পাদক পদে উন্নীত ১৯৫০-এ আজাদ থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেয়া হলে সৎকর্তৃক পুস্তক ব্যবসা সংস্থা কিতাবিস্তানের প্রতিষ্ঠা (১৯৫০-১৯৫১-তে সাপ্তাহিক ইত্তেফাকের সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন (১৯৫২-র ফেব্রুয়ারির ভাষা আন্দোলনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ করেন। ১৯৫৭-র ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত কাগমারী সাংস্কৃতিক সম্মেলনের সম্পাদক। ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির জন্মলগ্ন (২৫ জুলাই ১৯৫৭) থেকেই এ দলের রাজনীতির সাথে জড়িত ও কিছুকাল দলের ঢাকা জেলা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬১-তে বাংলা একাডেমির অনুবাদ বিভাগের অধ্যক্ষ নিযুক্ত হন। ১৯৭২-এ চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এ পত্রিকায় অল্পদর্শী ছদ্মনামে ‘বৈহাসিকের পার্শ্বচিন্তা’ কলাম রচনা সময়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপন। বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনেরউচ্চপদে দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশ শান্তি পরিষদের সভাপতি, বাংলা একাডেমির কার্যনির্বাহী পরিষদের নির্বাচিত সদস্য, বঙ্গবন্ধু পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, বাংলাদেশ আফ্রো-এশীয় লেখক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ- ভারত মৈত্রী সমিতির সভাপতি। তিনি উপন্যাস, ছোটগল্প ও মননশীল প্রবন্ধ রচনা করে সুনাম অর্জন করেন। প্রকাশিত গ্রন্থাবলী: উপন্যাস- পরিত্যক্ত স্বামী (১৯৪৭), মুক্তি (১৯৪৮), ভাওয়াল গড়ের উপাখ্যান (১৯৬৩), পদ্মা মেঘনা যমুনা (১৯৭৪), সংকর সংকীর্তন (১৯৮০), প্রপঞ্চ (১৯৮০), দেয়াল (১৯৮৫); গল্পগ্রন্থ : জীবন (১৯৪৮), শেষ রাত্রির তারা (১৯৬৬), রাজেন ঠাকুরের তীর্থযাত্রা (১৯৭৮), লাংড়ী (১৯৮৪), নির্বাচিত গল্প (১৯৮৮); প্রবন্ধ গ্রন্থ চিন্তার বিবর্তন ও পূর্ব পাকিস্তানী সাহিত্য (১৯৬৪), Sociology of Bengal Politics (১৯৭৩), সোচচার উচ্চারণ (১৯৭৭), সমাজ, সংস্কৃতি ও ইতিহাস (১৯৭৯), মধ্যপ্রাচ্য, ইসলাম ও বাঙালি সংস্কৃতি (১৯৮৮), বৈহাসিকের পার্শ্বচিন্তা (১৯৮৯)। উপন্যাসে বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬৮) লাভ। সাংবাদিকতায় অবদান রাখায় বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক একুশের পদক প্রদান, ১৯৮৩। তিনি ২৪ জুন ১৯৮৮ মৃত্যুবরণ করেন।




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ