কবি ফররুখ আহমদ (জীবনী)
প্রথম পাতা » জীবনী » কবি ফররুখ আহমদ (জীবনী)কবি ফররুখ আহমদ
মুসলিম রেনেসাঁর কবি।কবি ফররুখ আহমদের জন্ম মাঝআইল গ্রাম, যশোর ১০.৬.১৯১৮। পিতা পুলিশ ইন্সপেক্টর সৈয়দ হাতেম আলী। খুলনা জেলা স্কুল থেকে ১৯৩৭-এ ম্যাট্রিক এবং কলকাতা রিপন কলেজ থেকে ১৯৩৯-এ আই.এ. করেন। এরপর প্রথমে স্কটিশচার্চ কলেজে দর্শনে অনার্স এবং পরে সেন্ট পল কলেজে ইংরেজিতে অনার্স অধ্যয়ন করেন। কলেজ জীবনে বামপন্থী রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন। এ সময়ে রেডিক্যাল ‘ হিউম্যান আন্দোলনের নেতা এম.এন. রায়ের অনুসারী হন। ১৯৪৩-এ আই. জি. (প্রিজন) অফিসে, ১৯৪৪-এ সিভিল সাপ্লাই অফিসে ১৯৪৫-১৯৪৭-এ জলপাই গুড়িতে একটি ফার্মে ও ‘মোহাম্মদী’ পত্রিকার সম্পাদকীয় বিভাগে এবং ১৯৪৭-১৯৭৪-এ ঢাকা বেতারে ‘স্টাফ রাইটার’ পদে চাকরি করেন। কর্মজীবনে বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ হয়। ইসলামের মৌল আদর্শ গ্রহণ করেন। ১৯৫২-র ভাষা আন্দোলনের প্রতি সমর্থন প্রদান করেন। পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় কাঠামো ও আদর্শের প্রতি অবিচল বিশ্বাস স্থাপন করেন। রবীন্দ্র সঙ্গীত পাকিস্তানের আদর্শের পরিপন্থী এই বক্তব্য উপস্থাপন করে ১৯৬৭-র ২২ জুন পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য ও বেতার মন্ত্রী খাজা শাহাবুদ্দীন জাতীয় পরিষদে এক বিবৃতিতে রেডিও টেলিভিশন থেকে রবীন্দ্র সঙ্গীত প্রচার বন্ধের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলে মন্ত্রীর সেই সিদ্ধান্তের প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের (১৯৭১) বিরোধিতা করে বক্তৃতা ও বিবৃতি প্রদান এবং পাকিস্তানের সংহতির প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করে কবিতা রচনা করেন। ১৯৬০-এ বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৬১-তে পাকিস্তান সরকারের প্রেসিডেন্ট পুরস্কার ‘প্রাউড অব পারফরমেন্স ১৯৬৬-তে ‘হাতেমতায়ী’ গ্রন্থে আদমজী পুরস্কার এবং ১৯৬৬-তে ‘পাখির বাসা’ ‘ইউনেস্কো পুরস্কার লাভ করেন। মুসলিম পুনরুজ্জীবনদানকারী কবি।
পাকিস্তানবাদ, ইসলামিক আদর্শ এবং আরব-ইরানের ঐতিহ্য তাঁর কবিতায় উজ্জ্বলভাবে প্রস্ফুটিত হয়। আরবি ফারসি শব্দের প্রয়োগে নৈপুণ্যে, বিষয়বস্তু ও আঙ্গিকের অভিনবত্বে তাঁর কবিতা এক বিশিষ্ট সৃষ্টি। ব্যঙ্গ কবিতা ও সনেট রচনায় তাঁর কৃতিত্ব অনস্বীকার্য। প্রকাশিত গ্রন্থ সাত সাগরের মাঝি (কাব্য, ১৯৪৪), সিরাজাম মুনীরা (কাব্য, ১৯৫২), নৌফেল ও হাতেম (কাব্যনাট্য, ১৯৬১), মুহূর্তের কবিতা (সনেট সংকলন, ১৯৬৩), পাখির বাসা (শিশুতোষ গ্রন্থ, ১৯৬৫), হাতেমতায়ী (কাহিনী কাব্য, ১৯৬৬), নতুন লেখা (শিশুতোষ গ্রন্থ ১৯৬৯) হরফের ছড়া (১৯৭০), ছড়ার আসর (১৯৭০), হে বন্য স্বপ্নেরা, হাবেদা সফর কাহিনী । মৃত্যু ঢাকা- ১৯.১.১৯৭৪ খ্রি। ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দে একুশে পদক (মরণোত্তর), ১৯৮০ খ্রি. স্বাধীনতা পুরস্কারে (মরণোত্তর) ভূষিত হন।