কলিম শরাফী

প্রথম পাতা » জীবনী » কলিম শরাফী


কলিম শরাফী

রবীন্দ্রসঙ্গীতে কালজয়ী প্রতিভা
১৯২৪ সালের ৮ মে পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের খয়রা দিহিতে জন্ম করেন কলিম শরাফী। যাঁকে বলা হয় সঙ্গীত দিকপাল। রবীন্দ্র জগতের বাগানে বিশালাকৃতির বটবৃক্ষ তিনি। গানের ভুবনে কলিম শরাফী আলাদাভাবে উজ্জ্বল একটি নাম। তাঁর যাত্রা শুরু হয়েছিল ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির সাংস্কৃতিক সংগঠন আইপিটিএ (ভারতীয় গণনাট্য সংঘ) থেকে। প্রথাগত প্রশিক্ষণ ছাড়াই তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন আলাদা বৈশিষ্ট্যে। গণসঙ্গীত ও রবীন্দ্র সঙ্গীত-এই দুই ক্ষেত্রেই তাঁর দক্ষতা প্রশ্নাতীত। এ দেশের সংস্কৃতির সুষ্ঠু বিকাশে রয়েছে অগ্রণী ভূমিকা। দেশের অন্যতম প্রধান সাংস্কৃতিক সংগঠন হিসেবে যে উদীচীর পরিচিতি ব্যাপক। কলিম শরাফী এর নেতৃত্বে যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখেছেন। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করে কলিম শরাফী শিল্পী হননি। প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত হয়েই শিল্পী কলিম শরাফীর জন্ম। সেই ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের কথা- ভারত ছাড় আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে ম্যাট্রিক পরীক্ষা দেবার পরই গ্রেফতার হন। তিনি। এ বিষয়ে কলিম শরাফী হেসে বলতেন, জেলে থাকাকালীন সহকর্মীরা জানতে পারেন আমি গান গাইতে পারি। দেশীয় সঙ্গীতে বিশেষ করে রবীন্দ্রসঙ্গীতের অতুলনীয় কণ্ঠ তাঁর। তিনি একাধারে ভাল গায়ক, দক্ষ সংগঠক ও প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনের নিরলস সৈনিক ছিলেন। রবীন্দ্র সঙ্গীতের মানস সরোবরে স্নাত কলিম শরাফীর দেশপ্রেম ও মানব প্রেম অতুলনীয়। রবীন্দ্র আন্দোলন, তান আন্দোলন, সাংস্কৃতিক আন্দোলনে তিনি বরাবরই সক্রিয় এবং ছিলেন। তাঁর উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ‘বাংলাদেশ রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী সংস্থা’ যার তিনি কার্যকরী সভাপতি ছিলেন। তিনি ছায়ানট ও জাতীয় রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্মিলন পরিষদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তাঁর সমসাময়িক, কল্যাণকামীরা বলেন, এই প্রতিভাধর মানুষটির সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়েছে, তার প্রতিভা মেধার মূল্যায়ন যথাযথভাবে দেয়া হয়নি। সঙ্গীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার তাকে একুশে পদক- ১৯৮৫ ও ‘স্বাধীনতা পদক-১৯৯৯’ প্রদান করেন। তিনি ২০১১ খ্রিস্টাব্দে পরলোকগমন করেন।




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ