সত্যেন সেন

প্রথম পাতা » জীবনী » সত্যেন সেন


সত্যেন সেন
বিপ্লবী সাহিত্যিক, উদীচীর প্রতিষ্ঠাতা
সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও বিপ[]বী সত্যেন সেন ১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন মুন্সীগঞ্জের বিক্রমপুরে। পিতা ধরণীমোহন সেন। শান্তিনিকেতনের আচার্য ক্ষিতিমোহন সেন ছিলেন তাঁর পিতৃব্য। সোনার বিদ্যালয় থেকে এন্ট্রান্স পাস করে তিনি চলে যান কলকাতায়। উদ্দেশ্য ছিল উচ্চতর শিক্ষালাভ। কলকাতায় থেকেই তিন আই.এস.সি এবং পরে বি.এ পাস করেন। তারপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এম.এ ক্লাসে ইতিহাস নিয়ে ভর্তি হন। কিন্তু ইতিমধ্যেই তিনি ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। নাম লেখান যুগান্তর দলে। স্বাভাবিকভাবেই বিপ্লবী হিসেবে পুলিশের খাতায় নাম ওঠে যায়। প্রথমবার গ্রেফতার হন ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে। কারাগারে থাকেন প্রায় আট বছর। তবে কারাগারে তিনি বসে থাকেননি। অসমাপ্ত ইতিহাস পড়া বাদ দিয়ে শুরু করেন বাংলা সাহিত্য পড়া। মেধাবী ছাত্র ছিলেন। তাই জেলে থেকেই বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এম.এ পাস করেন। ১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দে কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন । মুক্তি পাবার পরে একটু চেষ্টা করতেই পেয়ে গেলেন গবেষণা বৃত্তি। তাও আবার শান্তিনিকেতনে। কিন্তু মাথায় আবার সেই রাজনীতি চেপে বসতেই পড়াশুনা করতে লাগলেন মার্কসবাদের ওপর। দীক্ষা নিলেন মার্কসবাদে, সমাজতন্ত্রে। ফিরে এলেন মাতৃভূমিতে। সংগঠিত করলেন কৃষকদেরকে। তাদের দাবী দাওয়া নিয়ে শুরু করলেন আন্দোলন। ঢাকা জেলা কৃষক সমিতির নেতৃত্বে এলেন । ফলে আবার পুলিশের খাতায় নাম উঠল। ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে গ্রেফতার হলেন দ্বিতীয়বারের মতো। বছর চারেক পরে ৫৩ খ্রিস্টাব্দে মুক্তি পেলেন। এরপর রাজনীতিতে বেশি জড়ালেন না নিজেকে। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এম.এ পাস করা সত্যেন সেন এবারে সাংবাদিকতায় । যোগ দিলেন দৈনিক সংবাদ-এ সহকারী সম্পাদক হিসেবে।১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দে দেশে জারি হলো নামরিক শাসন। এবারেও নিস্তার পেলেন না। পুনরায় পুলিশ তাঁকে নিয়ে গিয়ে ঢোকাল জেলে। কারণ রাজনৈতিক। এবারে দীর্ঘ পাঁচ বছর জেলে থেকে ৬৩ তে ফিরে এলেন পুরনো কর্মস্থল সংবাদে। এরপরে রাজনীতির চাইতে সংস্কৃতি অঙ্গনের দিকেই ঝুঁকলেন বেশি করে। ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে প্রতিষ্ঠা করলেন ‘উদীচী’। এরপর থেকে আত্মনিয়োগ করলেন সাহিত্য সাধনায়। লিখলেন রুদ্ধদ্বার মুক্তবাণ, অভিশপ্ত নগরী, পাপের সন্তান, পদচিহ্ন, নেয়ানা, বিদ্রোহী কৈবর্ত, পুরুষমেধ, আলবেরুনী, সাত নম্বর ওয়ার্ড, উত্তরণ, মহাবিদ্রোহের কাহিনী, প্রতিরোধ সংগ্রামে বাংলাদেশে, বাংলার পথে পথে, এটনের কথা, মনোরনা মালিনা, পাতাবাহার, ভোরের বিহঙ্গী ইত্যাদি গ্রন্থ। বিচিত্র পর বিষয় নিয়ে লিখেছেন তিনি। চিরকুমার সত্যেন সেন ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দে উপন্যাসের জন্য এবং ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার । ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দের ৫ ডিসেম্বর তিনি শান্তিনিকেতনে পরলোকগমন করেন।




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ