ধীর আলী মিয়া

প্রথম পাতা » জীবনী » ধীর আলী মিয়া


ধীর আলী মিয়া
প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ খ্যাতিমান সঙ্গীতশিল্পী ধীর আলীর জন্ম, বাঁশবাড়ি গ্রাম, টঙ্গীবাড়ি, মুন্সিগঞ্জ,১.১.১৯২০। বংশীবাদক, সঙ্গীত পরিচালক, সুরকার অর্কেস্ট্রা পরিচালক। তিনি টঙ্গীবাড়ি প্রাইমারি স্কুলের পাঠ শেষ করে স্থানীয় সোনারঙ হাইস্কুলে ভর্তি হন। এ স্কুলে কয়েক ক্লাস পর্যন্ত অধ্যয়ন বংশীবাদন সঙ্গীতের প্রতি করেন। অনুরাগবশত স্কুলের পাঠ ত্যাগ করে। প্রখ্যাত আলীর কাছে সঙ্গীতজ্ঞ পিতৃব্য সাদেক শৈশবকাল থেকে বংশীবাদনের তালিম গ্রহণ করেন। সে সঙ্গে ক্ল্যারিওনেট, গিটার, বেহালা প্রভৃতি বাদ্যযন্ত্র বাদনে দক্ষতা অর্জন করেন। ১৯৪৫-এ অল ইন্ডিয়া রেডিওর ঢাকা কেন্দ্রে অনিয়মিত বংশীবাদক হিসেবে অংশ গ্রহণ করেন। ১৯৪৮-এ এর ১এপ্রিল তদানীন্তন রেডিও পাকিস্তান ঢাকা কেন্দ্রে ‘নিজস্ব শিল্পী হিসেবে যোগ দেন। ১৯৫২-তে সঙ্গীত প্রযোজক ও ১৯৭৮-এ উপ-প্রধান সঙ্গীত বেতারের চাকরি থেকে পরিচালক পদে উন্নীত হন। ১৯৮৩-র ৩১ ডিসেম্বর ঢাকা অবসর গ্রহণ করেন। ‘ঢাকা অর্কেস্ট্রা’ নামে অর্কেস্ট্রা দলের সংগঠক। তিনি লাহোরে অনুষ্ঠিত ‘অল পাকিস্তান রেডিও মিউজিক কনফারেন্স’ ও ভারতে অনুষ্ঠিত ‘বঙ্গ সংস্কৃতি সম্মেলন’-এ অংশগ্রহণ করেন। সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি দলের সদস্যরূপে ভারত, রাশিয়া ও আফগানিস্তান সফর করেন। তিনি বুলবুল ললিতকলা একাডেমি (বাফা) ও আর্টস কাউন্সিলের প্রশিক্ষণ কোর্সের শিক্ষকতার দায়িত্ব পালন করেন। দেশের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য ছায়াছবি ‘মুখ ও মুখোশ’-এর সহকারী সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন। হিজ মাস্টার্স ভয়েস এবং ঢাকা গ্রামোফোন কোম্পানি কর্তৃক তাঁর সুরারোপিত ও পরিচালিত কয়েকটি গানের ডিস্ক প্রকাশনা রয়েছে। নাচঘর, উজালা, দস্যুরাণী, কাজলরেখা প্রভৃতি ছায়াছবির সঙ্গীত পরিচালক। আধুনিক বাংলা গানে লোকসঙ্গীতের সুর সংযোজন করে তৎকর্তৃক বাংলা গানের রাজ্যে এক নতুন অধ্যায়ের সংযোজন হয়। মনরে ভবের নাট্যশালায় মানুষ চেনা দায়’, কলসী কাঁখে ঘাটে যায় কোন রূপসী,’ ‘বাসন্তী রঙ শাড়ি পরে কোন বঁধুয়া চলে যায়, ‘নিশি জাগা চাঁদ হাসে কাঁদে আমার মন,’ ‘ঐ বাঁকা চাঁদ কেন উঁকি দিয়ে জানালায়,’ ‘ওরে আমার ঝিলাম নদীর পানি,’ ‘বন্ধুর প্রেমে হইলাম পাগল,’ ‘সালাম লহ দেশের মাটি,’ ‘আমার সোনার দেশ’ ইত্যাদি জনপ্রিয় গানে সুর সংযোজন করেছেন। সঙ্গীতের ক্ষেত্রে অবদান রাখায় তদানীন্তন পাকিস্তান সরকার ১৯৬৫-তে ‘তমঘায়ে ইমতিয়াজ’ খেতাবে ভূষিত করে। মৃত্যু, ১৪.১২.১৯৮৪। ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে তাকে একুশে পদক (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়।




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ