আনোয়ার হোসেন

প্রথম পাতা » জীবনী » আনোয়ার হোসেন


আনোয়ার হোসেন
বাংলার নবাব খ্যাত চলচ্চিত্র অভিনেতা মানুষ জন্মায়, মৃত্যুও বরণ করে। এই জন্ম- মৃত্যুর মাঝখানের সময়টুকুতে মানুষ যেটুকু পারে তার কর্মগুণে অর্জন করে সাফল্য, সুনাম, সুখ্যাতি। কিন্তু সাফল্য-সুনাম অর্জনের পরও কিংবদন্তি হয়ে ওঠা চাট্টিখানি কথা নয়। আনোয়ার হোসেন সেই পর্যায়ে নিজেকে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন তার অসাধারণ অভিনয়গুণে। তাকে অভিনয়ের রাজপুত্র বললেও ভুল হবে না। ভুল হবে না, যদি বলি তিনি সিনেমা জগতের নবাব। বাংলার নবাব সিরাজদ্দৌলা চরিত্রে অনবদ্য অভিনয় করে তিনি বাংলা সিনেমাপ্রেমী মানুষের কাছে এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, দেশের আপামর মানুষ ‘বাংলার নবাব সিরাজদ্দৌলা’ বলতে আনোয়ার হোসেনকেই বুঝেন। খ্যাতিমান এই অভিনেতার জন্ম জামালপুর জেলার সারুলিয়া গ্রামে ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দের ৬ নভেম্বর। তার বাবার নাম নজির হোসেন, মাতা- সাঈদা খাতুন। তার শৈশব কেটেছে সারুলিয়াতেই । জামালপুরের বিভিন্ন স্কুলে কেটেছে তার স্কুল জীবন, ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে জামালপুর স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। এরপর ভর্তি হন ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজে। স্কুল জীবন থেকেই আনোয়ার হোসেন অভিনয়ের সঙ্গে জড়িত এবং নাট্যাভিনেতা হিসেবেই যাত্রা শুরু। প্রথম অভিনয় করেন আসকার ইবনে শাইখের নাটক ‘পদক্ষেপ’-এ। স্কুল জীবনেই এই নাটকে অভিনয় করেন তিনি। তারপর থেকে বিভিন্ন মঞ্চনাটকে তিনি অভিনয় করেছেন। মঞ্চে অভিনীত বিভিন্ন চরিত্রের মধ্যে তার উল্লেখযোগ্য ‘নবাব সিরাজদ্দৌলা’। মঞ্চে এই নাটকে বহুবার অভিনয় করেছেন তিনি। ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে চলে আসেন ঢাকায়। এখানে চলচ্চিত্র পরিচালক মহিউদ্দিনের সাথে তার পরিচয় ঘটে। মহিউদ্দিনের সহকারী মো. আনিসের মাধ্যমে। মহিউদ্দিনের হাত ধরেই ‘তোমার আমার’ চলচ্চিত্রে প্রথম অভিনয়ের সুযোগ পান আনোয়ার হোসেন। এরপর থামেননি তিনি, একের এক ছবিতে অভিনয় করে যান বিরামহীনভাবে। তবে বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করেন তিনি খান আতাউর রহমান পরিচালিত ‘নবাব সিরাজদ্দৌলা’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করে। এ ছবিতে অভিনয়ের জন্য পাকিস্তান থেকে নিগার এ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। বাংলা চলচ্চিত্রে অকৃত্রিম অবদানের জন্য বিভিন্ন সংগঠন থেকে অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। ‘লাঠিয়াল’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান, পরে আরো ২ বার এ পুরস্কারে ভূষিত হন তিনি। ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দে লাভ করেন। দেশের অন্যতম সম্মাননা পুরস্কার ‘একুশে পদক’। নিজের চোখের সামনে দেশকে স্বাধীন হতে দেখেছেন- এটা তার জীবনের একটা স্মরণীয় মুহূর্ত। রাজনীতিতে জড়িত হননি। তবে ভাষা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েছিলেন আবুল মনসুর আহমেদের ছেলে মতলুব আনামের সঙ্গে। তিনি ২০১৩ খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন।




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ