অমলেন্দু বিশ্বাস

প্রথম পাতা » জীবনী » অমলেন্দু বিশ্বাস


অমলেন্দু বিশ্বাস
প্রখ্যাত যাত্রাশিল্পী
বাঙালি লোকসংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে যাত্রা। এই যাত্রাকে আধুনিক ও একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প মাধ্যম হিসেবে তুলে ধরতে যে কজন গুণী শিল্পী ক্লান্তিহীনভাবে কাজ করে গেছেন অমলেন্দু বিশ্বাস তাদের বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম। যাত্রা আন্দোলনের নতুনধারার পথিকৃৎ প্রতিভাধর নাট্যশিল্পী যাত্রাসম্রাট অমলেন্দু বিশ্বাসের জন্ম বার্মার রেঙ্গুনে ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে। তবে তার পৈতৃক নিবাস চট্টগ্রামে। অমলেন্দু বিশ্বাসের পিতা সুরেন্দুলাল বিশ্বাস ছিলেন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা। অমলেন্দু বিশ্বাস বি.এ. করার পর ব্রিটিশ ভারতের রয়েল এয়ারফোর্সে যোগ দেন। পরে চাকরি নেন রেলওয়েতে। কিন্তু চাকরি তার ভাল লাগেনি। সৃষ্টির নেশা তাকে হাতছানি দিয়ে ডাকতো। তাই চাকরি ছেড়ে দিয়ে যোগ দেন রাজনীতি, গণসঙ্গীত ও নাট্যচর্চার সঙ্গে। প্রায় পঁচিশ বছর বিভিন্ন যাত্রাদলে অভিনেতা, পরিচালক হিসেবে কাজ করেছেন। প্রায় তিনশর মত পালা নাটকে অভিনয় করেছেন। তার উলেখযোগ্য পালা হচ্ছে- সেলিম, হিটলার, সিরাজউদ্দৌলা, জানোয়ার, মমতাময়ী মা প্রভৃতি। ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি চট্টগ্রামের প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনে জড়িত হন, প্রান্তিক নবনাট্য সংঘের সঙ্গে কাজ করতে থাকেন। বিভিন্ন সংগঠনে কাজ করেছেন। ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দে মানিকগঞ্জের জাবরা গ্রামে গড়ে তোলেন নিজস্ব নাট্য সংগঠন ‘চারণিক নাট্যগোষ্ঠী’। মানিকগঞ্জের মাটি ও মানুষকে ভালবেসে এখানেই স্থায়ী নিবাস গড়েন তিনি। ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে যাত্রাশিল্পের কৃতি অভিনেত্রী জ্যোৎস্না বিশ্বাসের সঙ্গে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। এ প্রজন্মের প্রতিভাময়ী অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস তাদের মেয়ে।। ‘জানোয়ার’ ও ‘মাইকেল মধুসূদন’ পালায় অভিনয়ের জন্য ১৯৭৯-৮০ খ্রিস্টাব্দে শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত যাত্রা উৎসবে পরপর দুইবার শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার লাভ করেন এই গুণী শিল্পী। ১৯৮৯ খ্রিস্টাব্দে মরণোত্তর একুশে পদক, ১৯৯০-এ থিয়েটার প্রবর্তিত মুনীর চৌধুরী সম্মাননা পুরস্কার পান। অমলেন্দু বিশ্বাস ১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ