অধ্যাপক মোবাশ্বের আলী

প্রথম পাতা » জীবনী » অধ্যাপক মোবাশ্বের আলী


অধ্যাপক মোবাশ্বের আলী
শিক্ষাবিদ ও বরেণ্য গবেষক
অধ্যাপক মোবাশ্বের আলী। প্রথমত তিনি একজন আলোর পথের দিশারী। সেই সঙ্গে গবেষক ও ভাষা সৈনিক। রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের মাতৃভাষা বাংলাকে ঋদ্ধ করতে যে ক’জন শিক্ষাবিদ আত্মনিবেদিত হয়ে কাজ করেছেন তাদের মধ্যে তিনি অন্যতম একজন। দেশকে ভালবেসেছেন তিনি মনে প্রাণে। তাইতো তিনি কঠিন জীবনসংগ্রামের মধ্য দিয়েও দেশের জন্য কাজ করেছেন, স্বদেশপ্রেমে আকণ্ঠ নিমজ্জিত ছিলেন তিনি। মৃত্যুঞ্জয়ী এ মানুষটির জন্ম কুমিল্লা জেলায় ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে। কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন কলেজে তিনি দীর্ঘদিন অধ্যাপনা ও অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। যাটের দশক থেকে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আন্দোলন করেছেন। জীবনের কাছে তার চাওয়া-পাওয়ার কিছু ছিল না, প্রকাশ্যে তিনি কখনোই কোন দলের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেননি। অধ্যাপক মোবাশ্বের আলী একজন উঁচু মাপের সাহিত্যিক ছিলেন। জীবনের শেষ দিকে এসে অনেক লিখেছেন তিনি। তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৪৫টি। তন্মধ্যে- গ্রিক ট্রাজেডি, শিল্পীর ট্রাজেডি, শিল্পীর ভুবন, গ্রিসের দার্শনিকেরা প্রভৃতি উলেখযোগ্য। মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ওপর রচনা করেছেন তিনটি বই। তন্মধ্যে মধুসূদন ও জাগৃতি উল্লেখযোগ্য। নজরুলের ওপরও বই লিখেছেন তিনি। তন্মধ্যে নজরুল প্রতিভা ও বিশ্বসাহিত্য উল্লেখযোগ্য। তিনি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একজন পরম ভক্ত। তার মতে- বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ চারজন দার্শনিকের রবীন্দ্রনাথ। বঙ্কিমচন্দ্রের ওপর তার লেখা ‘বঙ্কিমচন্দ্রের জীবন ও সাহিত্যকৃতি’ একটি অনন্য গ্রন্থ। বাংলাদেশের সন্ধানে’ বইটিতে তিনি মাতৃভূমির প্রতি নিবিড় ভালোবাসা এমনভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন, যা অনবদ্য। অনুবাদ কর্মেও রেখেছেন তিনি নৈপুণ্যের স্বাক্ষর। সাহিত্যে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ অর্জন করেছেন একুশে পদক (১৯৯২ খ্রিস্টাব্দ), পেয়েছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার, কুমিল্লা ফাউন্ডেশন পদক। অধ্যাপক মোবাশ্বের ভক্তদের দাবি, তার কর্মের সুষ্ঠু পরিমাপ আজও হয়নি। তিনি যেন তার কাজের স্বীকৃতি পান- এটাই তাদের প্রত্যাশা। এই মহান মানুষটি ২০০৫ খ্রিস্টাব্দের ১১ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ