শহীদ শফিউর রহমান

প্রথম পাতা » জীবনী » শহীদ শফিউর রহমান


 শহীদ শফিউর রহমান
রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে ২২ ফেব্রুয়ারি যাঁরা শহীদ হন শহীদ শফিউর রহমান তাঁদের মধ্যে অন্যতম। পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগণা জেলার কোন্নাগরে তিনি ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মাহবুবুর রহমান ছিলেন ঢাকার পোস্ট এন্ড টেলিগ্রাফ অফিসের সুপারিন্টেনডেন্ট।
শফিউর রহমান কলকাতা গভর্নমেন্ট কমার্শিয়াল কলেজ থেকে আই.কম পাস করেন। এরপর তিনি চব্বিশ পরগণার সিভিল সাপ্লাই অফিসে কেরানির পদে চাকরি নেন।সাড়ে দশটার দিকে দাবিতে ছাত্র-জনতা কলকাতার তমিজ উদ্দিন আহমেদের কন্যা আকলিমা খাতুনের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। দেশ বিভাগের পর চব্বিশ পরগণা ছেড়ে পিতার সঙ্গে ঢাকায় চলে আসেন। এখানে ঢাকার হাইকোর্টে হিসাব বিভাগের কেরানী পদে চাকরি নেন। ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দের ২২ ফেব্রুয়ারি সকাল দশটায় ঢাকার রঘুনাথ লেনের বাসা থেকে সাইকেলে চেপে অফিসের পথে রওনা হন। ঐদিন সকাল নবাবপুর রোডে বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। পুলিশ এ বিক্ষোভ মিছিলে গুলি বর্ষণ করলে গুলি এসে শফিউরের পিঠে লাগে। আহত অবস্থায় তাঁকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেদিন সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। রাত তিনটায় পুলিশ প্রহরায় তাঁকে আজিমপুর গোরস্থানে দাফন করা হয়। আজ শফিউরের মতো আরও অনেক শহীদের আত্মত্যাগের জন্যই বাংলা ভাষা রাষ্ট্রভাষা হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি লাভ করেছে। ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দের ২২ ফেব্রুয়ারি শোক মিছিলের সময় কার্জন হলের সামনের রাস্তায় সামরিক বাহিনীর ট্রাকের নীচে চাপা পড়ে মারা যায় আব্দুল আউয়াল। অহিউল্লাহ নামে দশ বছরের এক কিশোর নবাবপুর রোডে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। এ ছাড়া সামরিক বাহিনীর ট্রাকের নীচে চাপা পড়ে মারা যায় অজ্ঞাত পরিচয়ের এক বালক। এরা সবাই ছিলেন অমর ভাষা শহীদ। বিশ্বের দরবারে বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা এবং পরবর্তী সময়ে বিশ্বের মানচিত্রে স্বাধীন বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশে তাঁরাই ছিলেন মূল স্থপতি এবং সকল সংগ্রামের অনুপ্রেরণা দাতা। ২০০০ খ্রিস্টাব্দে তাকে একুশে পদক (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়।




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ