নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী

প্রথম পাতা » জীবনী » নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী


নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী

বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক মহিয়সী নারীর নাম নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী। নবাব ফয়জুন্নেছার জন্ম ১৮৩৪ খ্রিস্টাব্দে ডাকাতিয়া নদীর উত্তর তীরে কুমিল্লা জেলার লাকসামের খান বাহাদুর বাড়িতে। রূপ জালাল নামে তাঁর গ্রন্থ বাংলা ভাষায় লিখিত মহিলাদের মধ্যে সর্বাগ্রে প্রকাশিত বই। মহিলা লেখিকাদের পথ প্রদর্শক ছিলেন ফয়জুন্নেছা। সাহিত্যের ইতিহাসে এটি এক বিরল দৃষ্টান্ত । ফয়জুন্নেছার রূপজালাল কাব্য তার স্বামী গাজী চৌধুরীর নামে উৎসর্গ করেছেন।
ফয়জুন্নেছার পিতার নাম সৈয়দ আহম্মদ আলী চৌধুরী, মাতার নাম আরফাননেছা চৌধুরানী। ফয়জুন্নেছার ভাই-বোনদের মধ্যে তিনিই জমিদারী পরিচালনার প্রশিক্ষণ পান। হোসনাবাদ পরগণার বিরাট জমিদারী তিনি পরিচালনা করেন। ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর মাসে ১৩১০ বাংলা ২০ আশ্বিন নবাব ফয়জুন্নেছা ইন্তেকাল করেন। তার জমিদারীর মধ্যে ১১টি কাচারীর প্রত্যেকটির পাশে বিশুদ্ধ পানির জন্য পুকুর কাটান এবং মক্তব ও প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করেন। তিনি ইসলামী কায়দায় বোরকা পড়ে পালকিতে করে প্রত্যেকের সুখ দুঃখ দেখতে গ্রামে গ্রামে যান। লাকসামের ফয়জুন্নেছা একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে বাংলাদেশে তথা সমগ্র বিশ্বে তার নাম ছড়িয়ে রয়েছে। তার নাম গুণকীর্তন করে দেশের মানুষ ধন্য হচ্ছে। সাহিত্য চর্চায় ফয়জুন্নেছার প্রতিভা দুনিয়ার মানুষ স্বীকার করেছে। এক তথ্যে জানা যায়, গাজী চৌধুরী প্রথম বিয়ে করেন ফয়জুন্নেছাকে। সতীন যাতনায় অতিষ্ঠ হয়ে ফয়জুন্নেছা বাকশার গ্রামে অল্প কিছু দিন থেকে পশ্চিমগাঁওতে স্থায়ী বসবাস করেন। শেষ বয়সে গাজী চৌধুরী দারুণ ব্যথা বেদনায় কুমিল্লা শহরের বীরবাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বাংলাদেশের গৌরব নবাব ফয়জুন্নেছার স্বামীর বাড়ি বরুড়া থানার বাকশার গ্রামে। বর্তমানে বংশের পাদপীঠে প্রদীপ হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন সৈয়দ এনায়েত উল হক চৌধুরী। নবাব ফয়জুন্নেছার দুই মেয়ের মধ্যে বদরুন্নেছা চৌধুরী পশ্চিমগাঁওতে এবং আসাদুন্নেছা চৌধুরানীকে বাকশারে রেখে যান। আসাদুন্নেছা চৌধুরানীকে বিয়ে দেন হবিগঞ্জ জেলার পইল জমিদার সৈয়দ ওয়াসেকুল হকের সঙ্গে। কুমিল্লা শহরে ১৮৭৩ খ্রি. নবাব ফয়জুন্নেছা দু’টি বালিকা বিদ্যালয় স্থান করেন। শহরে পূর্ব প্রান্তে নানুয়াদিঘীর পাড়ে প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয় এবং দ্বিতীয়টি বাদুরতলাতে উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। নবাব ফয়জুন্নেছার বালিকা বিদ্যালয় স্থাপনের দুই বছর পর স্যার সৈয়দ আহম্মদ আলীগড়ে ১৮৭৫ খ্রি. প্রথম মুসলিম কলেজ অ্যাংলো আলীগর।




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ