করিম শাহ্

প্রথম পাতা » জীবনী » করিম শাহ্


করিম শাহ্
মরমী সঙ্গীত শিল্পী
করিম শাহ্ -১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে ১৫ ফেব্রয়ারী কুষ্টিয়া জেলার দিরাই কাজেলার উজানধল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ঝুমুর আলী জোয়ারদার এবং মাতা রিজিয়া খাতুন কুসুম। করিম শাহর পিতা সম্পন্ন গৃহস্থ ছিলেন। তাঁর বাবা ঝুমুর আলী কৃষিকাজ করতেন। পাশাপাশি গান- বাজনাও ভলোবাসতেন। ঝুমুর আলী রিজিয়া খাতুন দুজনই কুষ্টিয়া শহরের কোলে উদিবাড়ি গ্রামে চিশতিয়া তরিকায় সাধক মনসুর শাহের দীক্ষা নেন। ভাব গানের পাল্লায় অংশ নিতে গ্রামের বাইরেও নানা জায়গায় ডাক পড়ত তার। পিতার কাছ থেকেই করিম শাহ্ গানের প্রতি আগ্রহের সৃষ্টি।
করিম শাহ্ অঞ্জনগাছি গ্রামেরই আবুল মকছুদের কাছে ভাব গানের তালিম নেন। গানের নেশায় ঘর ছাড়েন ১৬/১৭ বছর বয়সেই। উপস্থিত হন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার জগন্নাথপুরের বেহাল শাহ ফকিরের কাছে এখানে একটানা বেশ কয়েক বছর থাকেন তিনি । বেহাল শাহ্ তাকে উজাড় করে দিলেন তার গানের ভাণ্ডার । তিনি মনে করেন বেহাল শাহ্-ই তার গনের জগতের চক্ষুদানের গুরু। করিম শাহকে বলা যায় ভবঘুরে ফকির। সেই যে যৌবনকালে ঘর ছেড়েছিলেন বলতে গেলে এখনও পথে পথেই এ জীবনে তিনি বড় বড় সাধক মহাজনের সঙ্গ লাভ করেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছে পরম গুরু অমূল্য শাহ্, নিমাই শাহ্, আতর আলী শাহ্ অন্যতম। সাধুসঙ্গ আর নানা মহতের গান করতে করতে শখ হলো তাঁর গান বাঁধার। লালন শাহ, দুদ্দু শাহ্, পাঞ্জু শাহ্, জহরদ্দি শাহ-এদের গানের ধারায় যুক্ত হলেন আব্দুল করিম শাহ। যা দৈন্য, নবুয়ত, বেলায়েত, দেহতত্ত্ব, গুরুতত্ত্ব, মানুষতত্ত্বের।
যাবিদ।
বাউল করিম শাহ্ বাউল গানের এক অসাধারণ তত্ত্বজ্ঞানী। লালনের গানকেই তিনি সাধনার অবলম্বন হিসেবে কণ্ঠে তুলে নিয়েছেন। লালনের গানের শুদ্ধ ধারায় তিনিই অনেকের মৃত্যু পূর্ব পর্যন্ত জীবিদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ প্রতিনিধি। ৯২ বছর বয়সেও তিনি লালনের গান গেয়ে চলেছেন। শিল্পকলায় অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ করিম শাহকে ‘একুশে পদক-২০১১’
প্রদান করা হয় ।




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ