মংছেনচীং মংছিন্ রাখাইন

প্রথম পাতা » জীবনী » মংছেনচীং মংছিন্ রাখাইন


মংছেনচীং মংছিন্ (রাখাইন)


সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক ও মানবাধিকার কর্মী

যুগ যুগান্তর ধরে প্রকৃতির রঙ্গরসে ভরা সে স্বাস্থ্যকর স্থান কক্সবাজারের রাখাইন বৌদ্ধ জাতির উচ্চ শিক্ষিত সম্ভ্রান্ত পরিবারে প্রকৃতির এক শুভ লগ্নে জন্ম নিয়েছিলেন মহৎ প্রতিভাবান এবং রাখাইন বৌদ্ধ জাতির ঐতিহ্যপূর্ণ প্রতিষ্ঠাকারী বিভিন্ন গ্রন্থের প্রণেতা মি. মংছেনচীং মংছিন ১৯৬১ খ্রি. সনে ১৬ জুলাই রোজ শুক্রবার গ্রহরাজ সিংহ রাশি জাতক কক্সবাজার পৌরসভার চাউল বাজার সড়কস্থ (রাখাইন পাড়া) পৈতৃক বাস ভবনে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম স্বগীয় উ- অংচাথোয়েন ও মাতার নাম স্বর্গীয় ড- মাক্যচীং। পাঁচ (৫) ভাই ও এক (১) বোনের কনিষ্ঠ। শৈশব থেকে বিভিন্ন দেশি-বিদেশি শীর্ষস্থানীয় পত্র-পত্রিকায় রাখাইন জাতির ইতিহাস, ধর্ম, সাহিত্য, সংস্কৃতি, কৃষ্টি প্রভৃতি বিষয়ে লেখালেখি করে আসছেন। বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম কেন্দ্রের কথিকা লেখক ও পাঠক। তিনি রাখাইন নৃত্য, চারু ও কারুকলা এবং বাংলা, ইংরেজি, পালি, রাখাইন, মারমা, বার্মিজ, ত্রিপুরা ও চাকমা ভাষায় পড়া ও লেখার পারদর্শী। বাংলাদেশ রাখাইন বৌদ্ধ সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক সংস্থার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তিনি ঢাকাস্থ বাংলাদেশ ফোকলোর (গ্রামীণ লোক সাহিত্য) সোসাইটি, টাঙ্গাইল ছায়ানীড় ও বিশ্ব বাংলা সাহিত্য পরিষদ কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী পরিষদ- এর সদস্য।
কক্সবাজার কলেজে অধ্যয়নরত সময় ইউ,ও,টি,সি (U.O.T.C) ডিটাসমেন্টের একজন ক্যাডেট ছিলেন। তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর বাইবেল বিষয়ে ডিপ্লোমা পাশ করেন। পেশায় তিনি সাংবাদিক, গবেষক ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অধিকার আদায়ে উচ্চকণ্ঠ। তিনি অনেক পদক পুরস্কার ও সম্মাননা লাভ করেছেন। ছাত্র জীবনে তিনি সাহিত্য, সাংস্কৃতি ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অসংখ্য পুরস্কার প্রাপ্ত। “সম্মাননা সনদ” ২০১৩খ্রি. বাংলা, রাখাইন সাহিত্য ও সাংবাদিকতা বিশেষ অবদানে স্বীকৃতি স্বরূপ, আলোক নব গ্রহ ধাতু চৈত্য বৌদ্ধ বিহার পরিচালনা কমিটি, খাগড়াছড়ি সদর, খাগড়াছড়ি হইতে শুভ - বুদ্ধ পূর্ণিমা’ ২০১৩খ্রি.। সর্বস্তরে বাংলা ভাষা; শুদ্ধ বানানে শুদ্ধ উচ্চারণে ‘উপজেলা কর্মশালার ২০১৩খ্রি. ছায়ানীড় ভাষা গবেষণা বিভাগ, টাঙ্গাইল ‘সম্মাননা সনদ’২০১৩খ্রি. (তারিখ ২০ জুন ২০১৩খ্রি.)। সাহিত্য বিষয়ে বিশেষ কৃতিত্বপূর্ণ অবদান রাখায় সুন্দরবন আঞ্চলিক সাহিত্য সম্মেলন ২০১৪খ্রি. ‘সম্মাননা সনদ’ কবিতীর্থ, কালীগঞ্জ, সাতক্ষীরা, ব্যবস্থাপনায়ঃ বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি কালিগঞ্জ শাখা, সাতক্ষীরা (তারিখ ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ খ্রি.)। ছায়ানীড়ের ২৬ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ২০১৪খ্রি. ‘ছায়ানীড় স্মারক সম্মাননা’ জাতীয় জাদুঘর, কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তন, শাহবাগ, ঢাকা (২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৪খ্রি.)। মুর্শিদাবাদ রাহিলা সংস্কৃতি সংঘ-এর ৩০ তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে, ২১ ফেব্রুয়ারির বাংলা ভাষা আন্দোলনের শহিদদের স্মরণে এবং বিশ্ব মাতৃভাষা দিবসের প্রেক্ষিতে সাহিত্য সংস্কৃতি উৎসব-এর ‘রাহিলা সাহিত্য পুরস্কার-২০১৫’ পশ্চিমবঙ্গ বাংলা একাডেমি সভাঘর (নন্দন চত্ত্বর, কোলকাতা) ও ২৯/০১/২০১৬খ্রি. খুলনা ‘প্রবন্ধ ও গবেষণা সাহিত্য ফুলকলি পুরস্কার-২০১৬খ্রি.’ সম্মানা পদক পুরস্কার প্রদান করা হয়। ১৯৮৭ খ্রি.হতে ১৯৯৪ খ্রি. পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের পপুলেশন কনসার্ন পরিচালিত রাখাইন সমন্বিত পরিবার কল্যাণ প্রকল্পের কক্সবাজার ও বান্দরবান পার্বত্যজেলা ‘প্রকল্প পরিদর্শক’ পদে চাকুরিরত ছিলেন।
বর্তমানে ‘রাখাইন’ সাময়িকীর সম্পাদক, পার্বত্য অঞ্চল (রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি)’র সর্বপ্রথম ও চট্টগ্রাম বিভাগের সংবাদপত্র সাপ্তাহিক বনভূমি ও দৈনিক গিরি দর্পণ পত্রিকায় বিশেষ প্রতিনিধি (সমগ্র বাংলাদেশ) হিসেবে কর্মরত। তিনি দুই কন্যা সন্তানের জনক । ড. উএনু(প্রিয়াংকা/পুতুল) ও চেনচেননু তুলি (প্রিয়াংকা পুতুল জাতীয় রচনা প্রতিযোগিতা জাতীয় শিশু সপ্তাহ ‘স্বর্ণ পদক’ ২০০১’ প্রাপ্ত। বর্তমান দুই কন্যা সন্তানের জননী (প্রমিথি ও পরিধি), মহালছড়ি চৌংড়াছড়ি মুখ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষিকা পদে কর্মরত। চেনচেননু জাতীয় রচনা প্রতিয়োগিতায় ‘রৌপ্য পদক’ প্রাপ্তসহ জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা “শ্রেষ্ঠ বিতার্কিক” সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক ও মানবাধিকার কর্মী মি. মংছেনচীং(মংছিন)-এর লেখা প্রকাশিত বাংলাদেশ রাখাইন জাতির সর্ব প্রথম ও একমাত্র গবেষণা মূলক গ্রন্থ ‘রাখাইন ইতিবৃত্ত’ সুধী পাঠক সমাজে যথেষ্ট সমাদৃত হয়েছে। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ১৭টি। বাংলাদেশের রাখাইন পরিচিতি, রাখাইন ইতিবৃত্ত, সৈকত নন্দিনী (কবিতা), রাখাইন-বাংলা কথোপকথন (ভাষা শিখুন, প্রথম পাঠ), অগ্গমেধা বৌদ্ধ মন্দির এবং উ কসোল্লা মহাথেরো, ২০০৫ খ্রিস্টাব্দ শুভ-অশুভ দিন পঞ্জিকা (রাখাইন ভাষায়), রাখাইনালোক (ইংরেজি ও বাংলা ভাষায়), রাখাইন জাতির রত্ন, রাখাইনাদর্শ, রাখাইন- বাংলা কথোপকথন, ভাষা শিখুন, রাখাইন-ত্রিপুরা জাতিসত্তা, আলোক নবগ্রহ ও চন্দ্রমণি মহাথেরো, রাখাইন আলাং (আলোকিত রাখাইন, রাখাইন ভাষা), রাখাইন চাগা (রাখাইন ভাষা) রাখাইন চাথ্রান (রাখাইন গান, রাখাইন ভাষা) ইত্যাদি ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা ১২টি। তাঁর সহধর্মিণী শোভা রাণী ত্রিপুরা পেশায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ও সু-প্রতিষ্ঠিত লেখিকা। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ১২টি।
তাঁদের অনেক পাণ্ডুলিপি এখনো অপ্রকাশিত অবস্থায় পড়ে আছে। এজন্য সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষক এবং প্রকাশকদের সহযোগিতা আন্তরিকভাবে কামনা করছেন ।




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আর্কাইভ