সূফী জুলফিকার হায়দার (জীবনী)

প্রথম পাতা » জীবনী » সূফী জুলফিকার হায়দার (জীবনী)


সূফী জুলফিকার হায়দার

কবি ও নজরুল সুহৃদ হিসেবে হিসেবে সূফী জুলফিকার হায়দারের জন্ম ভাতুরিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া, অগ্রহায়ণ- ১৩০৬ (১৮৯৯)। স্থানীয় শিবপুর মাইনর স্কুল থেকে ইংরেজি পরীক্ষায় পাস করে বিদ্যাকোট উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ম্যাট্রিক পরীক্ষার কিছুদিন পূর্বে বাড়ি থেকে পালিয়ে কলকাতা গমন (১৯১৭) করেন। অতঃপর সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। বোম্বাই-এ ট্রেনিং গ্রহণের পর প্রথম মহাযুদ্ধে (১৯১৪-১৯১৮) অংশগ্রহণের জন্য বাগদাদ যান। যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর বাগদাদে ব্রিটিশ বাহিনী ভেঙ্গে দেয়া হলে কলকাতায় প্রত্যাবর্তন (১৯১৯) করেন। ব্রিটিশ ম্যাকিনন ম্যাকেঞ্জি অ্যান্ড কোম্পানিতে (কলকাতা) ট্রাভেলিং সুপারভাইজার পদে চাকরি গ্রহণ করেন। কার্যেপিলক্ষে ভারত উপমহাদেশের বিভিন্ন শহর, মধ্যপ্রাচ্যের বহু দেশ এবং শ্রীলঙ্কা ও ব্রহ্মদেশ ভ্রমণ করেন। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের বন্ধু। ১৯৪২-এর ১০ জুলাই কবি দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে রুগ্ন কবির চিকিৎসা ও তাঁর পরিবার-পরিজনকে দেখাশোনার দায়িত্বভার নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করেন। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর কলকাতা ত্যাগ করে ঢাকায় আগমন করেন। আধ্যাত্মিক সাধনার চৌদ্দ বছর ব্যাপৃত থাকার পর ১৯৬২ তে সমাজ জীবনে প্রত্যাবর্তন করেন। চট্টগ্রামের হজরত শাহ সূফী আলহাজ মওলানা অলি আহমদ নিজামপুরী পীর সাহেবের কাছে থেকে ‘সূফী’ আখ্যা লাভ করেন। তিনি একজন বিশিষ্ট কবি। কাব্য সাধনার দিক থেকে কাজী নজরুল ইসলামের ভাবশিষ্য। সামাজিক অন্যায় অবিচার ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফুর্ত প্রতিবাদ তাঁর কবিতায় ভাষায়িত। ইসলামিক আদর্শের রূপায়ন তাঁর কবিতার অপর গুণ। ‘ভাঙ্গা তলোয়ার’ (১৯৪৫), ‘ফের বানাও মুসলমান’ (১৯৫৯), ‘বিপ্লব বিপ্লব দ্বিতীয় বিপ্লব’ (১৯৭৫), প্রভৃতি সূফী জুলফিকার হায়দারের প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ। নজরুল গবেষণায় ও নজরুল বিষয়ক স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থ রচনায় দক্ষতার পরিচয় প্রদান করেন। তাঁর রচিত ‘নজরুল জীবনের শেষ অধ্যায় (১৯৬৪) গ্রন্থখানি নজরুলের জীবনী সংক্রান্ত গ্রন্থগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। তিনি পাকিস্তান সরকার কর্তৃক ‘সিতারা-ই-খিদমত’ উপাধি পান (১৯৭০) বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ‘একুশের পদক ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দে, নজরুল ইনস্টিটিউট কর্তৃক ‘নজরুল স্মৃতি পুরস্কার (১৯৮৫) পান। তাঁর মৃত্যু ঢাকায় ২৩ এপ্রিল ১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দ।