ড. এম. শমশের আলী (dr.m. shamsher ali)

প্রথম পাতা » জীবনী » ড. এম. শমশের আলী (dr.m. shamsher ali)


ড. এম. শমশের আলী (dr.m. shamsher ali)


ড. এম. শমশের আলী   বিশিষ্ট পরমাণুবিজ্ঞানী ১৯৬১ সালে ঢাকায় আণবিক শক্তি কমিশনে সায়েন্টিফিক অফিসার পদে যোগ দিয়ে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৮২ সাল পর্যন্ত তিনি এই প্রতিষ্ঠানের নানা পর্যায়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। এর পাশাপাশি অসামান্য একাডেমিক ক্যারিয়ারের স্বীকৃতিস্বরূপ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭৩ সালে তাঁকে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অনারারি প্রফেসর-এর বিরল সম্মানে ভূষিত করেন। পরবর্তীতে দুই যুগ ধরে তিনি এই বিভাগের নিয়মিত অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
উচ্চশিক্ষার সুযোগ বঞ্চিত ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে শিক্ষার সুযোগ করে দিতে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা তাঁর একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ। তিনি ছিলেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্নের বাস্তব রূপদানকারী প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য। তিনি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক নানা প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার উচ্চতর পরামর্শক, গবেষক ও প্রতিনিধির সম্মানে সম্মানিত । তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত অধ্যাপনা শেষে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ইমিরেটাস হিসেবে দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন। বিজ্ঞান জগতে খ্যাতনামা ব্যক্তিত্ব ড. এম. শমশের আলী বিশ্বের তিনটি সায়েন্স একাডেমির ফেলো- ওয়ার্ল্ড একাডেমিক অব সায়েন্স, একাডেমি অব সায়েন্স অব দি ইসলামিক ওয়ার্ল্ড এবং বাংলাদেশ একাডেমি অব সায়েন্স (প্রেসিডেন্ট : ২০০৪-২০১২)। তিনি বাংলা একাডেমির একজন ফেলো।
বিজ্ঞানভাবনা প্রসারে সদা-উৎসাহী ড. এম. শমশের আলী টানা এক যুগ ধরে বিটিভি-তে ‘বিজ্ঞান বিচিত্রা ও নতুন দিগন্ত’ দুটি নতুন ধারার শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন। এ সময় তিনি বিজ্ঞানের নানা গুরুত্বপূর্ণ দিকসহ ধর্ম, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ে সিরিজ লেকচার প্রদান করেন। তিনি বিজ্ঞানকে অত্যন্ত সহজ সরলভাবে উপস্থাপনের দক্ষ কারিগর। বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর মাঝে বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করে তোলার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি অর্জন করেছেন ‘ওয়ার্ল্ড একাডেমি অব সায়েন্স ও ইতালির থার্ড ওয়ার্ল্ড নেটওয়ার্ক অব সায়েন্টিফিক অর্গানাইজেশনের সম্মাননা ।
বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে তিনি ভূষিত হয়েছেন বহু গুরুত্বপূর্ণ সম্মাননা ও পুরস্কারে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হরিপ্রসন্ন রায় স্বর্ণপদক, বাংলাদেশ একাডেমি অব সায়েন্স স্বর্ণপদক, জগদীশ চন্দ্র বসু স্বর্ণপদক এর অন্যতম। এছাড়াও দেশ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের প্রথমসারীর সায়েন্টিফিক জার্নালগুলোতে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর বিজ্ঞান, ধর্ম, সংস্কৃতি ও প্রকৃতির সাথে বিজ্ঞানের অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক ভিত্তিক নানা প্রকাশনা ও গবেষণামূলক প্রবন্ধ । তিনি নিয়মিত গণিত, বিজ্ঞান, ধর্ম, সংস্কৃতি, প্রকৃতি ও ইসলামের আলোকে জীবন এবং জীবনের জন্য বিজ্ঞান নিয়ে লিখছেন। এ বিষয়ে তাঁর দুটি উলেখযোগ্য গ্রন্থ ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই প্রকাশিত হয়েছে। ১. ইসলাম বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি ও ২. সমসাময়িক কিছু প্রসঙ্গ : ইসলামের আলোকে ভাবনা। যথাক্রমে 1. Islam Science & Culture. 2. Islam & Some Contemporary Issues. প্রখ্যাত পরমাণুবিজ্ঞানী প্রফেসর এম শমশের আলী একজন সদালাপী, সজ্জনপ্রিয় ও আদর্শ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ ।
তথ্যসূত্র: ২০১৮  সালে প্রকাশিত  ‘গণিত হোক আনন্দময়’  গ্রন্থ থেকে সংকলিত।