হাসনা হেনা (Hasna Hena)

প্রথম পাতা » জীবনী » হাসনা হেনা (Hasna Hena)


হাসনা হেনা“                                                                                         তোমার জন্য সব রেখেছি। ছিলাম তোমার, এখনও আছি। সময় পেলে একটু ভেবো- বদলে যাওয়া তুমি কতটা পথ পেরিয়ে এসে হয়েছো আজ দারুণ অভিলাষী’ এই দীপ্ত উচ্চারণ জানিয়ে দিচ্ছে শাশ্বত প্রেমের পূজারি কবি হাসনা হেনা। তার কবিতার পাতায় পাতায় অনেকটা অন্ধের মতোই প্রেমের বীণরণন তিনি শুনিয়েছেন। সেই অজর প্রেম কাব্য, উত্তাল সাগরের আছড়ে পড়া ঢেউয়ের মতো, বিরহের চোরাবালিতে মুখ থুবড়ে পড়েছে বারংবার। কবি প্রেম-বিরহের এই দ্বৈরথে চড়ে কবিতার শব্দমালায় প্রজাপতির রং মেখে যেন রক্তিম গোলাপের সুরভি ছড়িয়ে দিয়ে হাজির করলেন, তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ-’প্রজাপতির ডানায় রক্তগোলাপ’। এই কাব্যগ্রন্থের কবির পোশাকি নাম হাসনা হেনা হলেও তার পিতৃপ্রদত্ত নাম-হাসিনা আকতার! তিনি আট ভাই-বোনের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ। বিগত সত্তরের দশকের শেষ দিকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে তার জন্ম। মেয়েবেলা তার বেগমগঞ্জেই কাটে। সবার ছোট হাসনা হেনা খুব আহ্লাদি ও চটপটে ছিলেন, স্কুলে ভর্তি হলেও ছিলেন স্কুলবিমুখ, বাউণ্ডুলে। বাবা ওয়াজী উল্লাহ নৌবাহিনীতে চিফ পেটি অফিসার হিসেবে চাকরি করতেন, থাকতেন করাচিতে। তিনি চাকরি শেষ করে নোয়াখালীতে চলে এসে স্থানীয় একটি মাদরাসায় গণিত ও ইংরেজির শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন এবং ছোট কন্যাকেও ওই মাদরাসা থেকে প্রাথমিক শেষ করালেন। তারপর পদিপাড়া নজরুল একাডেমি হাই স্কুল থেকে লেখক কৃতিত্বের সাথে এসএসসি পাস করে যথারীতি কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু একাদশে পড়াবস্থায় তাকে বিয়ের পিঁড়িতে বসিয়ে দেওয়া হলো! স্বামী মোহাম্মদ রফিক উল্লাহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা ছিলেন। কবি তিন সন্তানের জননী, রত্নগর্ভা। সংসার ধর্ম পালন, সন্তানদের লেখাপড়া এবং নিজের স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের কাজটি নিরলসভাবে সম্পাদন করতে হয়েছে তাকে। চাকরির সুবাদে স্বামী মফস্বল শহরে অবস্থান করলেও কবি দাম্পত্য জীবনের শুরু থেকেই ঢাকায় বসবাস করতে শুরু করেন। তিন সন্তানে নিয়ে অনেকটাই এই একক পথচলা কবিকে আত্মপ্রত্যয়ী হতে দারুণ সহায়ক হয়েছে। তবে ফাঁদ চেনার আগেই ফাঁদে আটকে পড়া ডাহুকির মতো কবি-হৃদয়ে যে ক্ষরণ একদা জন্ম নিয়েছিল নির্ঝরের ন্যায় আজও তা প্রবহমান। কবির ভেতর আরো একটি লালিত স্বপ্ন অঙ্কুরিত হতে শুরু করেছিল সেই মেয়েবেলা থেকেই! ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় লেখকসত্তার বিকাশ এবং তার গল্প ও কবিতা লেখায় হাতেখড়ি। তার প্রথম কবিতার বই ‘নীল আকাশের নীচে’, প্রকাশিত হয় ২০১৬ সালের একুশে গ্রন্থমেলায়। তিনি একজন দক্ষ সংগঠকও । ‘স্বপ্নাকাশ’ নামক একটি সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের তিনি প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক। তার সম্পাদনায় মেঘনা পাবলিকেশন্স থেকে ‘স্বপ্নবিলাস-১’ এবং ছিন্নপত্র প্রকাশন থেকে ‘স্বপ্নবিলাস-২’ এই দুটি যৌথ কাব্য সংকলন বের হয় ২০১৭ এবং ২০১৮ গ্রন্থমেলায় । এ ছাড়া লিটল ম্যাগ ‘স্বপ্নাকাশ’-এর তিনি সম্পাদক । তিনি নানা প্রতিকূলতাকে দু’পায়ে মাড়িয়ে কবিতাচর্চায় অদম্য।