মাহবুব-উল আলম (Mahbub-ul Alam)
প্রথম পাতা » জীবনী » মাহবুব-উল আলম (Mahbub-ul Alam)
খ্যাতিমান সাহিত্যিক- সাংবাদিক মাহবুব-উল আলমের জন্ম মাতুলালয়, ফতেয়াবাদ গ্রাম, চট্টগ্রাম, ১ মে ১৮৯৮। পৈতৃক নিবাস ফতেপুর, চট্টগ্রাম। ফতেয়াবাদ হাই স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পাস (১৯১৬)। কিছুদিন চট্টগ্রাম কলেজে আই এ ক্লাসে অধ্যয়ন করেন। প্রথম মহাযুদ্ধের সময়ে বাঙালি পল্টনে যোগদান (১৯১৭) করে মেসোপটেমিয়া গমন করেন এবং যুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধশেষে বাঙালি পল্টন ভেঙ্গে দেয়া হলে দেশে প্রত্যাবর্তন (১৯১৯) করেন। ১৯২০- এ সাব ডিস্ট্রিক্ট সাব- রেজিস্ট্রার এবং একই বছর জুন মাসে ইন্সপেক্টর অব রেজিস্ট্রেশন পদে উন্নীত হন। ১৯৫৪-তে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। একই বছর ২৮ অক্টোবর (১৯৫৪) তাঁর সম্পাদনায় চট্টগ্রাম থেকে সাপ্তাহিক ‘জামানা’ পত্রিকা প্রকাশিত হয়। কথা সাহিত্য, স্মৃতিকথা ও ইতিহাস-রচয়িতা হিসেবে তিনি খ্যাত। তাঁর প্রথম রচনা ‘পল্টন জীবনের স্মৃতি’ (১৯৪০)। আত্মচরিতমূলক এই গ্রন্থে তাঁর সৃষ্টিশীল মনের পরিচয় স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রকাশিত। আত্মজীবনীমূলক অপর গ্রন্থ মোমেনের জবানবন্দী’ (১৯৪৬) সমাজ ও বাস্তব জীবনের একখানি নিখুঁত চিত্র। মাহবুব-উল আলমের গদ্যরীতি সাবলীল ও বলিষ্ঠ। ‘তাজিয়া’ (১৯৪৬) ও ‘পঞ্চ অন্ন’ (১৯৫৩) তাঁর বিখ্যাত গল্প সংকলন। ছোটগল্পেই তাঁর শিল্পীসত্তা পূর্ণভাবে বিকশিত হয়। ‘মফিজন’ (১৯৪৬) বাস্তব জীবনভিত্তিক ‘মিনিয়েচার’ উপন্যাস। ‘গোঁফ-সন্দেশ’ (১৯৫৩) একটি ব্যঙ্গ রচনা। জাতিসংঘের ইউনেস্কোর কমিশন পেয়ে ‘বার্মা’(১৯৫৯), ‘সিলোন’ (১৯৫৯), ‘ইন্দোনেশিয়া’ (১৯৫৯), ‘তুর্কি’ (১৯৬০), সৌদি আরব’ (১৯৬০), ‘পূর্ব পাকিস্তানের পক্ষী’ (১৯৬০), ‘পূর্ব পাকিস্তানের রণক্ষেত্র’(১৯৬০) ও ‘পূর্ব পাকিস্তানের মৎস্য সম্পদ’ (১৯৬০) নামক পুস্তিকা রচনা করেন । ‘চট্টগ্রামের ইতিহাস’ (তিন খণ্ড, ১৯৪৭-১৯৫০) ও ‘বাঙালির মুক্তিযুদ্ধের ইতিবৃত্ত’ (চার খণ্ড) তাঁর ইতিহাসমূলক গ্রন্থ। সাহিত্যকর্মের জন্য বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬৫), প্রেসিডেন্টের পুরস্কার ‘প্রাইড অব পারফরমেন্স’ (১৯৬৭) ও একুশে পদক (১৯৭৮) লাভ করেন। তিনি ৭ আগস্ট, ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দে চট্টগ্রামে মৃত্যুবরণ করেন ।