গুলশান আরা রুবী

প্রথম পাতা » জীবনী » গুলশান আরা রুবী


গুলশান আরা রুবী

কবিতা তো হৃদয়ের গহীনের অব্যক্ত কথা। ছন্দের আবহে আর গদ্যের পাতাবহে এর সুগভীর চলা। কবিতা তাই হৃদয়ের আকুতি, আবেদন এবং অনাকাঙ্ক্ষিত চাওয়া। কবিতার মধ্যেই আছে জীবনের আনন্দ। কবিতা বেঁচে থাকার এক টুকরো প্রেরণার হীরকখণ্ড । জীবনের দর্শনে এর প্রকাশে ভিন্নতা নিরূপিত হলেও কবিতার আহবান কাল থেকে কালান্তরে জাগরূক থাকে মানবমনে। কবিতাই হয়ে উঠে জীবনের ভাষা। এ ভাষাকে রপ্ত করে কবিরা হয়ে উঠেন অমর এবং অক্ষয় ।
কবি গুলশান আরা রুবী একজন জীবনবাদী কবি। তাঁর বহুমাত্রিক পরিচয়। তিনি একাধারে কবি, গল্পকার, প্রাবন্ধিক এবং ঔপন্যাসিক। তিনি জীবনকে ধারণ করেন তাঁর বুকে। এ ধারণ করা তাঁর কবিতায় জীবন্ত হয়ে ওঠে সৃজনের আনন্দ তাকে দেয় অপার প্রশান্তির ধারা। তিনি গেয়ে চলেন জীবনের গান। এ গানে ভেসে আসে জীবনকে খোঁজে নেওয়ার তীব্র এক প্রেষণা। তিনি একজন সার্থক কবি। তিনি নিজের ভাষায় কবিতা লিখেন। কবিতার ব্যাকরণের বাইরে গিয়ে তিনি রচনা করেন একটি বিস্ময়ের জগত। এখানেই তাঁর এবং তাঁর কবিতার স্বতন্ত্র। ‘হৃদয় পোড়া আর্তনাদ’ কাব্যগ্রন্থ তার সার্থক বহিঃপ্রকাশ।
গুলশান আরা রুবী বৃহত্তর সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা প্রয়াত হাজি মো. আব্দুর রহীম ও মা তৈয়বুন্নেছা খানম। তিনি কৈশোরকাল থেকেই লেখালেখি করে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে তাঁর মন যার শাওনের মেঘ’, ‘পারিবারিক জীবনের নৈতিক পরিচর্যা’, ‘মানবিক মূল্যবোধ বিকাশে ইসলাম’, ‘যুদ্ধদিনের ভালোবাসা’, “মাধুরী রাতের বাতায়ন’ এবং ‘বর্ণালি হৃদয়ে স্বর্ণালি প্রেম’ নামক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিটি গ্রন্থেই তাঁর সৃজনশীলতার স্বকীয় নির্মাণের উজ্জ্বল চিদাভাস লক্ষ করা যায়। কবি, ঔপন্যাসিক গুলশান আরা রুবীর সাহিত্যমানস তাঁর সৃজনশীলতায় নিপুণভাবে ফুটে উঠেছে। ‘হৃদয় পোড়া আর্তনাদ’ কাব্যগ্রন্থে কবির স্বকীয়তার উজ্জ্বল প্রকাশ ঘটেছে। এ গ্রন্থটি তাঁর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ।
‘হৃদয় পোড়া আর্তনাদ’ কাব্যগ্রন্থে কবির মানবতাবোধের এক দেয়াল খসে পড়েছে। তিনি এ দেয়ালকে ভেঙ্গে দিয়েছেন তাঁর বোধ, চৈতন্য এবং সার্বিকতা দিয়ে। প্রচণ্ড খরা রোদের তাপে যেমন খই ফুটে, তাঁর কবিতায় তেমন ফুটেছে মানবতার একটি শালীন ভাষা। হৃদয় মননে তিনি যে আদর্শ ধারণ করেন, এটারই প্রকাশ ঘটেছে কবিতার পরতে পরতে। তাঁর জীবনদর্শন এবং কবিতার আগমনী গান যেন একাত্মতা প্রকাশ করেছে দরদিয়া মনে। কবির কবিতার ভাষা প্রাঞ্জল, সহজিয়া এবং আবেগীয়। তিনি বস্তুবাদী চেতনাকে সমূলে উৎপাটিত করেছেন তাঁর কবিতায় রোমান্টিকতার আবহ যেমন গভীরভাবে ফুটে উঠেছে, তেমনই ভাবে মরমি ভাবনাও তাঁর কবিতাকে করেছে গতিশীল এবং প্রাণবন্ত। তিনি জীবনের এক মুহূর্তে দাঁড়িয়ে উপলব্ধি করেন—এ জীবনের শেষ কোথায়! তিনি কবিতায় শুনতে পান অনন্তলোকের আহবান। এ আহবানে মিশে আছে কমনীয়তা, বিনম্রতা এবং দরদি ভাব! ‘হৃদয় পোড়া আর্তনাদ’ কাব্যগ্রন্থ তাঁর সৃষ্টির দুয়ার খোলে দিল। এ সৃষ্টিতেই তিনি বেঁচে থাকবেন কালপ্রবাহে। তাঁর কবিতা গভীরভাবে পঠিত হবে সাহিত্য অনুরণনে। ‘হৃদয় পোড়া আর্তনাদ’ কাব্যগ্রন্থটি পাঠক অন্তরে ভালোবাসার স্থান দখল করুক।

.তথ্যসূত্র: .২০২২  সালে প্রকাশিত  ‘মানবজীবনের  সাফল্যের স্বরুপ’  গ্রন্থ  থেকে সংকলিত।