বন্দে আলী মিয়া
প্রথম পাতা » জীবনী » বন্দে আলী মিয়া
কবি, গীতিকার ও নাট্যকার
বন্দে আলী নিয়া। একাধারে তিনি একজন কবি, শিশু সাহিত্যিক, ঔপন্যাসিক, গীতিকার, নাট্যকার, সাংবাদিক ও চিত্রকর। এই প্রতিভাবান মানুষটির জন্ম পাবনা জেলার রাধানগর গ্রানে নিম্নবিত্ত পরিবারে। পিতা মুন্সি উমেদ আলী ছিলেন পাবনা জজকোর্টের একজন নিম্ন পদের কর্মচারী। পাবনার মজুমদার একাডেমি থেকে ১৯২৩ খ্রিস্টাব্দে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করে কলকাতা আর্ট একাডেমিতে ভর্তি হন এবং ১ম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে ইসলাম দর্শন পত্রিকায় সাংবাদিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৩০ থেকে ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত কলকাতা কর্পোরেশন স্কুলে শিক্ষকতা করেন। ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দের পর প্রথমে ঢাকা বেতার ও পরে রাজশাহী বেতারে চাকরি করেন। এছাড়া ছোটদের পত্রিকা কিশোর পরাগ, শিশু বার্ষিকী, জ্ঞানের আলো প্রভৃতি সম্পাদনা করেছেন। কবি বন্দে আলী মিয়া ছিলেন প্রকৃতির রূপ সৌন্দর্য বর্ণনার কবি। প্রকৃতির রূপ- সৌন্দর্য বর্ণনায় তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। তার রচিত শিশুতোষ গ্রন্থগুলো আজও অমর হয়ে আছে। দেশ-বিভাগের আগে তিনি কলকাতা জীবনে রবীন্দ্র-নজরুলের সান্নিধ্য লাভ করেন। বিভিন্ন গ্রামোফোন কোম্পানিতে তাঁর রচিত পালাগান ও নাটিকা রেকর্ড আকারে কলকাতার বাজারে খুব জনপ্রিয়তা অর্জন করে। তার সম্পর্কে মূল্যায়ন- ভাষ্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেন, ‘বন্দে আলীর কবিতা অভিব্যক্তিকে আন্দোলিত করে। কাব্যজীবনের সূচনা লগ্নেই। তাঁর রচনা সহজ ও স্পষ্ট, কোথাও কোন ফাঁকি নেই। বন্দে আলী মিয়া মনের অনুরাগ দিয়ে যা দেখেছে, কলমের অনায়াস ভঙ্গিতে তাই তুলে এনেছে। তার সুপরিচিত প্রাদেশিক শব্দগুলো অকুণ্ঠচিত্তে কবিতায় যথাস্থানে ব্যবহার করে কবিতাকে আরো সরস করে তুলেছে। বাংলা সাহিত্যে সে আপন বিশেষ স্থানটি অধিকার করতে পেরেছে বলে আমি মনে করি। দুই শতাধিক গ্রন্থের রচয়িতা বন্দে আলী মিয়া। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ময়নামতির চর, অরণ্য, গোধুলী, ঝড়ের সংকেত, নীড়ভ্রষ্ট, জীবনের দিনগুলো, অনুরাগ।শিশুতোষ- চোরজামাই, মেঘকুমারী, মৃগপরী, বোকা জামাই, কামাল আতাতুর্ক, ডাইনী বট, রূপকথা, কুঁচবরণ কন্যা, ছোটদের নজরূপ, পিয়ার পাঠশালা, বাঘের ঘরে গোগের বাসা ইত্যাদি। শিশু সত্যি যোগ্য অবদানের জন্য তিনি ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে বাং পুরস্কার, ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে বেসিডেন্ট পুরস্কার এবং নরণোত্তর ২১শে কাকে ১৯ খ্রিস্টাব্দে ভূষিত হন। তিনি ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দের ২৭ জুন মৃত্যুবরণ করেন।