মোশারেফ উদ্দিন আহমদ
প্রথম পাতা » জীবনী » মোশারেফ উদ্দিন আহমদভাষাসৈনিক ও সংগঠক
গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষে যেসব শিল্পী সঙ্গীতের মাধ্যমে লড়াই করেছেন তাঁদের উৎসাহ ও পৃষ্ঠপোষকতা দেয়া ছিল যাঁর কাজ এবং পূর্ব বাংলার লড়াকু শিল্পীকুলের প্রেরণার উৎস মোশারেফ উদ্দিন আহমদের জন্ম ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার গুলিশাখালি গ্রামে। তাঁর পিতার নাম আজহার উদ্দিন আহম্মেদ এবং মাতা নুরুন্নাহার বেগম। মোশারেফ উদ্দিন আহমদ বরিশাল জেলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক, বরিশাল ব্রজমোহন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং পশ্চিমবঙ্গের শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে াতক ডিগ্রি অর্জন করেন। পঞ্চাশের দশকে তিনি ছিলেন সরকারের সেচ বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী। দেশে বন্যা প্রতিরোধ করার জন্য তিনি বিভিন্ন পরিকল্পনা করেন। গঙ্গা- ব্রহ্মপুত্র মাল্টিপারপাস প্রজেক্ট তৈরি করার জন্য তিনি মাসের পর মাস অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। নদীমাতৃক বাংলাদেশের পানি ব্যবস্থাপনা ও বন্যা সমস্যার সমাধান বিষয়ে তিনি ছিলেন এক মৌলিক চিন্তাবিদ। তাঁর Flow tide : Their effect on deltaic Rivers 4 Flood project for East Pakistan প্রবন্ধ দুটির মধ্যে প্রথম প্রবন্ধটি পাকিস্তান জার্নাল অব সায়েন্স এর ৬ষ্ঠ বর্ষ সংখ্যার ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়।
মোরারেফ উদ্দিন বাস করতেন আজিমপুরের চিনা বিল্ডিং-এ। তিনি সরকারি কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও নিজের ঘরটিকে তৈরি করেছিলেন সরকার বিরোধী সংস্কৃতি আন্দোলনের সূতিকাগার হিসেবে। ভাষা আন্দোলনের প্রথম প্রভাতফেরির গান- ‘মৃত্যুকে যারা তুচ্ছ করিল ভাষা বাঁচার তরে, আজিকে স্মরিও তারে’ তাঁরই অনবদ্য রচনা। বাঙালি সংস্কৃতির লালন ও বিকাশের জন্য প্রতিষ্ঠা করেন পূর্ব পাকিস্তান শিল্পী সংসদ। তিনি মওলানা ভাসানী কালচারাল সেন্টারের সেক্রেটারি এবং ছায়ানটের প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি। তাঁর বাড়িটি ছিল আন্ডারগ্রাউন্ড শিল্পী, লেখক ও সংস্কৃতিকর্মীদের এক নিরাপদ স্থান। বিপন্ন সময়ে তাঁদের গাড়ি দিয়ে পৌঁছে দিতেন নিজ নিজ গন্তব্যে। এতে তাঁর ক্যারিয়ার হয়েছে বিপন্ন এবং তিনি বঞ্চিত হয়েছেন প্রধান প্রকৌশলী হওয়ার সুযোগ থেকে।
ভাষা আন্দোলনে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মোশারেফ উদ্দিন আহমদকে একুশে পদক-২০১১’ প্রদান করা হয়।